ফারজানা রূপাকে ধন্যবাদ তবে…

বেলাল রিজভী:  ফারজানা রূপা মিডিয়া অঙ্গনে অতি পরিচিত মুখ সাহসী সাংবাদিক তা নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। তিনি বিভিন্ন সময়ে অনেক সাহসী প্রতিবেদন করেছেন।সম্প্রতি টিএসসির ন্যক্কারজনক ঘটনা নিয়ে একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেছেন।এই রিপোর্টের জের ধরেই ‘সম্প্রতি ফেসবুক ও ই-মেইলে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পরিচয়ে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি এই সহজ লভ্য সময়ে এই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের অবস্থান খুঁজের বের করা কঠিন কোন কাজ নয়।গণমাধ্যমগুলো এই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করতে পারে।প্রশাসন ইচ্ছা করলেই দোষিদের খুঁজে বের করতে পারে।তাকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জিডিও করা হয়েছে।তার এই হুমকি গোটা গণমাধ্যম কর্মীদেরই হুমকির সামিল।এই হুমকির তীব্র নিন্দা জানাই।যারা যুক্তিতে হেরে যায় তারাই হুমকি দিয়ে কন্ঠরোধ করতে চায়।অবিলম্বে এই দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবী জানাচ্ছি। তবে টিএসসির ঘটনা নিয়ে ফারজানা রুপার অনুসন্ধানী রিপোর্টে আমি একজন দর্শক হিসেবে অনেক উত্তরই পাইনি। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী সেদিন এই ন্যক্কারজনক ঘটনার পরে দুই নিপীড়ককে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছিল।কিন্তু পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে! কেন ছেড়েছে? তাদের পরিচয় কি? এসব উত্তর আমি একজন দর্শক হিসেবে ফারজানা রুপার রিপোর্টে খুঁজেছি কিন্তু পাইনি! ফারজানা রুপার ভাষায় পাঞ্জাবি পরিহিত ও মুখে গোঁফহীন দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তি বার বার একই জায়গায় ঘুরছিল। এ সময় মাথায় পট্টি বাধা আরও কয়েক ব্যক্তিকে একই জায়গায় দেখা যায়। তিনি এই ভিডিও ফুটেজ খুঁজে পেয়েছেন কিন্তু লিটন নন্দী নারীদের সম্ভ্রাম রক্ষা করতে গিয়ে আহত হয়েছে সেই ফুটেজ পেলেন না! কেন পেলেন না?পুলিশের কাছে আটক দুজনকে কে ছাড়িয়ে নিয়েছে? কেন নিয়েছে? সে উত্তর ছিলো না রুপার রিপোর্টে।সে দিন তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তিন স্থর বিশিষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা কেন কোন কাজে আসেনি? ফারাজানা রুপার ভাষায় ‘পাঞ্জাবি পরিহিত ও মুখে গোঁফহীন দাড়িওয়ালারা’ যখন মেয়েগুলোর গায়ে হাত দেয় তখন সেই ‘পাঞ্জাবি পরিহিত ও মুখে গোঁফহীন দাড়িওয়ালাদের’ কেন পাকরাও করল না প্রশাসন? কেন বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন নীরব ছিল? এই প্রশ্ন এবং তার উত্তর ফারজানা রুপার রিপোর্টে নেই। কেন নেই? তিন স্তর নিরাপত্তার মধ্যেই এই অপকর্ম কি করে সম্ভব হলো? ঘন্টা ব্যাপি এধরনের একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা পুলিশের সিসিটিভিতে ধারন করা হলেও পুলিশ কেন তৎক্ষনাৎ মনিটরিং করেনি? যদি মনিটরিং হয়ে থাকে তাহলে পুলিশ কেন তৎপর হয়নি? এসব প্রশ্নের উত্তর আমি তাঁর রিপোর্টে খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। সেদিন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লিটন নন্দী এক নারীকে উদ্ধার করে ছিলেন। গণমাধ্যমের খবর থেকে আমরা জানতে পেরেছি লিটন নন্দী তার গায়ের পাঞ্জাবী দিয়ে ওই নারী সম্ভ্রাম রক্ষা করেছিলেন। কোন স্থান থেকে উদ্ধার করেছিলেন ওই নারীকে? লিটন নন্দী কি দেখেছিল? কাদের দেখেছিল নারীদের লাঞ্চিত করতে? নাকি সবই লিটন নন্দীর বানানো গল্প? ফারজানা রুপার অনুসন্ধানী রিপোর্টটি আমি বার বার দেখেছি ইউটিউবে।কেন রুপার অনুসন্ধানে এই বিষয়গুলো আসেনি? আমি একজন দর্শক হিসেবে এই অমিমাংশিত প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে আরেকটি রিপোর্ট করার অনুরোধ করছি। নিন্দুকেরা দাবী করেন প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার নাটক! আমি সেটা নাই বা বললাম। এই সাহসী রিপোর্টের জন্য ধন্যবাদ ফারজানা রুপাকে তবে তিনি যদি এই উত্তরগুলো খুজের বের করতে পারেন তবেই বুঝে নেব তিনি সাহসী সাংবাদিকতা করেছেন। আর নিন্দুকেরা তার ভালো কাজ সহ্য করতে না পেরে বদনাম ছড়াচ্ছেন। যদি এই অমিমাংশিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ভয় পান তবে কি আমার মত বোকা দর্শকরা ধরে নেবে নিন্দুকের কথাই সত্য? আমরা দাড়িওয়ালা জঙ্গি বুঝি না, ছাত্রলীগ চিনি না, শিবির বুঝি না, ছাত্রদল চিনি না। আমরা সরকারের কাছে চাই আমার বোনের, আমার মায়ের,আমার বান্ধবীর, আমার প্রেমিকার নিরাপত্তা।তারা যেন পথে ঘাটে উলঙ্গ না হয়। তারা যেন সুষ্ঠ স্বাভাবিকভাবে ফিরতে পারে পারিবারের কাছে।

বেলাল রিজভী
বার্তা সম্পাদক দৈনিক মাদারীপুর সংবাদ মাদারীপুর
ইমেলইল: brezvi1983@gmail.com

৩ thoughts on “ফারজানা রূপাকে ধন্যবাদ তবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *