দুই কারণে ফের পেছালো ফাঁসি

ঢাকা: জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের রায় কার্যকর করতে গিয়ে নতুন সব জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার এতে যোগ হয়েছে ‘রায় কার্যকর পরবর্তী নিরাপত্তা’ জটিলতা। সেই সঙ্গে পরিবারের সাথে শেষ সাক্ষাতের সময়সূচি।

ফাঁসি কার্যকরের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার রায় কার্যকর প্রক্রিয়া হিসেবে সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার পর কারাভ্যন্তরে জেলা প্রশাসক, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সে বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে ‘নিরাপত্তাজনিত জটিলতার’ কথা তুলে ধরা হয়।

এছাড়া এই বৈঠকের পর প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ি দন্ডপ্রাপ্তর সাথে তার পরিবারের সাক্ষাতের যথাপযুক্ত সময় ছিল না।

আর এসব কারনেই শুক্রবার পিছিয়ে দেয়া হলো দণ্ড কার্যকর। এ বৈঠক শেষেই রাত ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে সাংবাদিকদের ‘শুক্রবার রায় কার্যকর না হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে’ কারাগার ত্যাগ করেন সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করেন তার আইনজীবীরা। সেদিন তারা মূলত রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া নিয়ে পরামর্শ করেন তারা। আর পরিবারের সদস্যরা সর্বশেষ দেখা করেন বুধবার।

শুক্রবার রাতে বৈঠকের আগে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে ঢাকা জেলা প্রশাসনের দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট কারাগারে প্রবেশ করেন। সেখানে তারা প্রাণভিক্ষার বিষয়ে জানতে চান। তবে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তারা বের হয়ে যাওয়ার সময় এ বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে সন্ধ্যার পর মুখ খোলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি জানান, কামারুজ্জামান রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাননি। তাই তাকে আর সময় দেয়া হচ্ছে না।

পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, হাইওয়েসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সে অনুযায়ী সন্ধ্যার পর কারা ফটকে গিয়ে ফাঁসির রায় কার্যকরের চূড়ান্ত প্রক্রিয়ার তোড়জোড় দেখা যায়। হঠাৎ করেই কারাগারের ভেতর ও আশপাশে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। এক সময় কারাভ্যন্তরে প্রবেশ করেন কারা চিকিৎসক আহসান হাবীব, লালবাগ জোনের এডিসি মফিজ উদ্দিন। তারাও বেরিয়ে যান রাত ৯টার দিকে। ফাঁসির মঞ্চের ওপরে সামিয়ানা টানানোর জন্য বাঁশও কারাগারের ভেতরে নেয়া হয় সন্ধ্যা ৭টার দিকে। এরপর নেয়া হয় বেশ কিছু প্লাস্টিকের চেয়ার। এসময় পর্যন্ত বিভিন্ন সূত্র থেকে রাতেই ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছিল।

কিন্তু ফরমান আলীর বের হয়ে যাওয়ার পর পরই দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে শুরু করে।

এর আগে গত সোমবার জামায়াতের সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামানের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যায়। সেদিন রাতেই কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতির খবর পাওয়া যায়। সেদিন রায় কার্যকরে জটিলতা দেখা দেয় রায়ের কপি হাতে না পাওয়ায়।

কারা সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরের পর কামারুজ্জামানের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের শেষবারের মতো দেখা করার সুযোগ দেয়া হবে। এবং নিয়ম অনুযায়ী আবারো বৈঠকে বসবেন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। সেখানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রায় কার্যকরের পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

৭ thoughts on “দুই কারণে ফের পেছালো ফাঁসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *