প্রতি ২০ জনে একজন কিডনির পাথরে ভোগেন!

ঢাকা: মূত্রতন্ত্রের সব রোগের মধ্যে পাথরজনিত রোগ বেশি। সমীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের দেশে প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজন কিডনির পাথরে ভোগেন। পাথর আকারে খুদে শস্যদানা থেকে শুরু করে টেনিস বল আকৃতির হতে পারে। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছোট পাথরগুলো প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে আসে। যাদের পাথর উপসর্গ তৈরি করে তাদের চিকিৎসা নিতে হয়।

কিডনির পাথর সাধারণত আকারে ছোট হয়ে থাকে। কিডনির ভেতরে কঠিন পদার্থ  জমা হয়ে পাথর হয়। সাধারণত খনিজ এবং অম্ল লবণ দিয়ে কিডনির পাথর তৈরি হয়। কিডনিতে বিভিন্ন কারণে পাথর হয়ে থাকে। তবে প্রস্রাব গাঢ় হলে তা খনিজগুলোকে দানা বাঁধতে সহায়তা করে এবং তা পাথরে রূপ নেয়। এককথায়, প্রস্রাবে বিভিন্ন উপাদান যেমন-তরল, খনিজ এবং অম্লের ভারসাম্যহীনতার কারণে কিডনিতে পাথর হয়।

নারীর তুলনায় পুরুষের পাথর হওয়ার হার বেশি। পুরুষের ক্ষেত্রে ৪০ বছর পার হওয়ার পরে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, যা ৭০ বছর পর্যন্ত চলতে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে ৫০ বছর বয়স থেকে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। তবে যে কোনো সময়েই যে কারও কিডনি বা মূত্রতন্ত্রে পাথর হতে পারে। যাদের একাধিকবার পাথর হয়েছে, তাদের বারবার হতে পারে।

মূত্রনালীতে পাথর না যাওয়া পর্যন্ত কিডনিতে পাথর হওয়ার কোন লক্ষণ ও উপসর্গ সাধারণত বুঝা যায় না। তবে কিডনিতে পাথর হলে সাধারণত: যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ গুলো দেখা দেয় তা হলে-

– পিঠে, দুই পাশে এবং পাঁজরের নিচে ব্যথা হওয়া ও তলপেট এবং কুঁচকিতে ব্যথা ছড়িয়ে যাওয়া।

– প্রস্রাব ত্যাগের সময় ব্যথা হওয়া।

– প্রস্রাবের রঙ গোলাপী, লাল অথবা বাদামী হওয়া।

– বারবার প্রস্রাবের বেগ পাওয়া।

– যদি কোন সংক্রমণ হয়ে থাকে তাহলে জ্বর এবং কাঁপুনী হওয়া।

– বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া।

কিডনির পাথরের ধরণ এবং কারণের উপর ভিত্তি করে কিডনির পাথরের চিকিত্সা ভিন্ন হয়ে থাকে ।

আকারে ছোট এবং সামান্য উপসর্গ যুক্ত পাথরের বেশিরভাগ ক্ষত্রে তেমন কোন চিকিত্সার প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে প্রতিদিন ১.৯ থেকে ২.৮ লিটার পানি পানসহ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ঔষধ সেবন করলে ভাল হয়। আবার আকার বড় পাথর হলে-শক তরঙ্গ ব্যবহার করে পাথর ভাঙ্গা বা ধ্বংস করা। অনেক বড় পাথর অপসারণের জন্য অপারেশন করার প্রয়োজন পরে। ইউরেটেরোস্কোপ ব্যবহার করে পাথর অপসারন করা যায়।

কিডনির পাথর প্রতিরোধে সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস রাখতে হবে। খাবারে লবণ কম খাওয়া এবং পরিমাণে অল্প প্রাণীজ আমিষ গ্রহণ করতে পারেন। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেতে হবে তবে ক্যালসিয়াম সম্পুরকের ক্ষেত্রে সতর্কতা মেনে চলা উচিৎ।

৮ thoughts on “প্রতি ২০ জনে একজন কিডনির পাথরে ভোগেন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *