সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে ইসলামি সংস্কৃতি

মুফতি খালিদ সাইফুল্লাহ রহ্‌মানী

সংস্কৃতি সভ্যতার অলঙ্কার, প্রধান-উপজীবিকা। সমাজ ও রাষ্ট্রের গতি সঞ্চালক। জাতি-গোষ্ঠীর বিশ্বাস ঐতিহ্যের প্রতীক। জন্মগতভাবেই মানুষ সংস্কৃতির অনুগামী। তাই মানব সভ্যতার সূচনা থেকেই পৃথিবীতে সংস্কৃতির পদযাত্রা শুরু। ইসলাম সংস্কৃতিকে ঐতিহ্য ও আত্দতৃপ্তির মতো দুর্বল ভিতের ওপর ছেড়ে না দিয়ে ইমান-আকিদার শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছে। একটি সার্বজনীন ও কল্যাণকর রূপদান করেছে ইসলাম। ইসলামে মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। তাই মানবজীবনের কোনো কাজই অর্থহীন হতে পারে না। সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময়। প্রত্যেক জাতি-গোষ্ঠী ও সমাজের একটি নিজস্ব ঐতিহ্য সংস্কৃতি আছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন- ‘আমি প্রত্যেক জাতিকে দান করেছি নিজস্ব ধর্ম ও জীবনাচার। (সূরা মায়েদা-৪৮)। ইসলামি সভ্যতা সংস্কৃতির প্রাণ হলো আল্লাহর প্রতি অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস। ইরশাদ হচ্ছে, ‘জেনে রেখ নিরঙ্কুশ প্রাপ্য হলো আল্লাহর আনুগত্য। (সূরা জুমার-৩)। এমনিভাবে ইসলামি সংস্কৃতি ও জীবনাদর্শের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে মানবিক দাসত্ব মুক্তি দেওয়া। আলোকিত জীবনের পথ দেখানো, কেননা, একমাত্র আল্লাহর জন্যই গোলামি করতে হবে। অপর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি যাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের জন্য। তোমরা ভালো কাজের আদেশ করবে, মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখবে। (সূরা-আল ইমরান-১১০)।

আফসোস! বর্তমানে মুসলিম জাতি ধ্বংসাত্দক সংস্কৃতি ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী জীবন দর্শন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েছে। ইসলামে কোনো সংকীর্ণতা নেই। মানুষকে সব ধরনের বৈধ বিনোদনের অনুমতি দিয়েছে। শিল্প-সাহিত্য, খেলাধুলা ও সংগীত সব ক্ষেত্রেই। তবে তা মানুষের জন্য উপকারী হতে হবে। আজ বিশ্বায়নের যুগে সংস্কৃতিমুক্ত মঞ্চে সমগ্র বিশ্ব যেভাবে ভোগবাদীর সংস্কৃতি গ্রহণ করছে বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহ, তাতে আজ ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি হুমকির মুখে। তাই আমাদের সর্বক্ষেত্রে সুস্থ ধারার ইসলামি সংস্কৃতি গ্রহণ করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।

লেখক : খতিব, মিজমিজি বাতানপাড়া, করবস্থান মসজিদ, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

২ thoughts on “সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে ইসলামি সংস্কৃতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *