শুক্র গ্রহ বা শুকতারার নতুন কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। মেঘের আচ্ছাদন থেকে মুক্ত ছবিগুলো সেখানকার ভৌগোলিক গঠন সম্পর্কে তুলনামূলক স্পষ্ট ধারণা দেয়। এতে জ্যোতির্বিদেরা গ্রহটির ব্যতিক্রমী পৃষ্ঠতল নিয়ে বিস্তারিত গবেষণার সুযোগ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
শুকতারাকে কখনো কখনো ‘পৃথিবীর বোন’ বলা হয়। কারণ, দুটি গ্রহের আকার, ভর, গঠন এবং সূর্য থেকে তাদের দূরত্ব প্রায় সমান। তবে তাদের বৈশিষ্ট্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। সৌরজগতের মধ্যে পৃথিবীসহ কাছাকাছি চারটি গ্রহের মধ্যে শুকতারার আবহমণ্ডল সবচেয়ে ঘন, যার ৯৬ শতাংশই কার্বন ডাই-অক্সাইড। ছোট ও উষ্ণ গ্রহ হিসেবে পরিচিত এই গ্রহে রয়েছে সালফিউরিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ উজ্জ্বল মেঘরাশি।
মহাশূন্য থেকে পৃথিবীর পৃষ্ঠতল নিয়মিত দেখা গেলেও শুক্র গ্রহ সব সময়ের জন্যই একধরনের প্রতিফলক বর্মে ঘেরা থাকে। ফলে সহজ উপায়ে সেখানকার উপরিতলের ছবি তোলার সুযোগ নেই। কিন্তু সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী দুটি মানমন্দিরের রাডারভিত্তিক সমন্বিত সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে মহাকাশ দূরবীক্ষণযন্ত্রের (স্পেস টেলিস্কোপ) সাহায্যে শুক্র গ্রহের বিশেষ ধরনের ছবি তুলতে সমর্থ হয়েছেন, যা থেকে গ্রহটির পৃষ্ঠতলের উল্লেখযোগ্য বিবরণ পাওয়া যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের (এনএসএফ) উদ্যোগে পুয়ের্তো রিকোর আরেসিবো অবজারভেটরির রয়েছে বেতার তরঙ্গ আদান-প্রদান করার সামর্থ্য। সেখান থেকে পাঠানো এ রকম তরঙ্গগুলো ভেনাসের পৃষ্ঠতল থেকে ফিরে আসার পর এনএসএফের গ্রিন ব্যাংক টেলিস্কোপের সাহায্যে সেগুলো গ্রহণ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় শুকতারার পৃষ্ঠতলের যেসব ছবি মিলেছে, সেগুলো থেকে গ্রহটির পর্বতমালা, বিভিন্ন গর্ত ও আগ্নেয়গিরির ভৌগোলিক গঠন সম্পর্কে তুলনামূলক স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্মিথসোনিয়ানস ন্যাশনাল এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়ামের জ্যোতির্বিদ ব্রুস ক্যাম্পবেল বলেন, রাডারের ছবি থেকে কোনো কিছু অনুসন্ধান বা পরিবর্তনের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা কঠিন কাজ। কিন্তু নতুন ছবিগুলোর সঙ্গে পুরোনো ছবি মিলিয়ে বিশ্লেষণ করে শুকতারার পৃষ্ঠতল সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
শুক্র গ্রহের উপরিতলের ছবি সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের প্রক্রিয়াটি নিয়ে লেখা গবেষণা প্রতিবেদনটি ইকারাস সাময়িকীতে প্রকাশের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছে।
সূত্র: ইউপিআই