কোন চাকরিতে বেতন বেশি?

কারো কাছে চাকরিটা কাজ, তাঁরা বেতন নিয়ে তেমন মাথা ঘামান না। আবার কারো কাছে বেতনটাই সব, চাকরিটা উছিলা মাত্র! তবে যার কাছে চাকরি ব্যাপারটা যেমনই হোক, মাস শেষে টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার আনন্দটা সবারই এক। তবে এই আনন্দের কম বেশি আছে। সেটা নোটের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। ক্যারিয়ারঅ্যাডিক্টডটকম জানিয়েছে দুনিয়ার কোন দেশে কারা সবচেয়ে বেশি বেতন পান।

১. কানাডা  

পেশা : বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

বেতন : মাসে তিন লাখ ৭৫ হাজার ডলার

কাজ : বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা কাজ করে থাকেন ক্লিনিক্যাল মেডিসিন, ল্যাবরেটরি মেডিসিন এবং সার্জারি নিয়ে। ক্লিনিক্যাল মেডিসিন নিয়ে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা রোগ শনাক্ত করে ওষুধ দেন। ল্যাবে যাঁরা থাকেন তাঁরা বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষা করে দেখেন এবং যাঁরা সার্জারি ডাক্তার তাঁরা অস্ত্রপচারের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলেন।

যোগ্যতা : এই কাজ পাওয়ার জন্য কানাডার সরকার অনুমোদিত কোনো মেডিকেল কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব সায়েন্সের ডিগ্রি নিতে হবে। এ ছাড়া বিশেষ ডিগ্রি নিতে হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হতে হলে কানাডায় আরো যেটা করতে হবে তা  হলো রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস অব কানাডা থেকে পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে। এই সার্টিফিকেট দেয় কানাডার প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ।

২.    দুবাই  

পেশা : পরিচালক

বেতন : মাসে এক লাখ ৯১ হাজার পাউন্ড

কাজ : একটি প্রতিষ্ঠানের সব অর্থনৈতিক এবং সেবামূলক কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের দায়িত্ব থাকে একজন পরিচালকের ওপর। তাঁকে একসাথে হিসাব-নিকাশ দেখতে হয়, আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কেনাবেচা এবং তথ্যপ্রযুক্তিগত দিকের সমন্বয় সাধনও করতে হয়। এখানেই শেষ নয়। প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বাজেট তৈরি, বার্ষিক কাজের প্রতিবেদন তৈরি, আইনগত দিকগুলোর সমন্বয় করা, প্রতিষ্ঠানের আয়কর সামলানো এবং কর্মী নিয়োগ ও তাদের পরিচালনার সব কাজই দেখভাল করতে হয়।

যোগ্যতা : বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশান অথবা ফিন্যান্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি। সাথে একটা এমবিএ থাকলে ভালো। এ ছাড়া ফিন্যান্স, অ্যাকাউন্টিং, বাজেট এবং ব্যয় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।

৩. সিঙ্গাপুর

পেশা : ব্যবস্থাপনা পরিচালক/ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

বেতন : মাসে তিন লাখ ৮২ হাজার ডলার

কাজ : প্রতিষ্ঠানভেদে এদের কাজের ধরন আলাদা হয়। তবে মূল যে কাজগুলো সবাইকেই করতে হয় তা হলো প্রতিষ্ঠানের নীতি নির্ধারণ এবং তা কার্যকর করা, মুনাফা বাড়ানো, প্রতিষ্ঠানের সব বিভাগের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় সাধন, প্রতিষ্ঠানের  বাজেট তৈরি এবং সুষ্ঠুভাবে তা পরিচালনা করা।

যোগ্যতা : ব্যবসায় প্রশাসন বা ব্যবস্থাপনায় ব্যাচেলর ডিগ্রি। এমবিএ করা থাকলে খুবই ভালো।

৪. আয়ার‍ল্যান্ড

পেশা : ব্যবস্থাপনা পরামর্শক

বেতন : মাসে দুই লাখ ১৬ হাজার ইউরো

কাজ : বিশ্বজুড়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনার সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে পরামর্শ দিয়ে থাকেন এরা। এদের কাজের উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র হচ্ছে বিপণন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং বিনিয়োগ, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি। পরামর্শদাতারা কঠিন সমস্যাগুলোর সমাধান দেন, উচ্চপদস্থ কর্মীদের দিকনির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণ দেন।

যোগ্যতা : যেকোনো বিষয়ে অনার্স বা মাস্টার্স করা থাকলেই চলবে। তবে ব্যবসায় প্রশাসন, ফিন্যান্স, অর্থনীতি, গণিত বা প্রকৌশলবিদ্যার ডিগ্রি থাকলে সুবিধা।

৫. জার্মানি

পেশা : মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা নির্বাহী

বেতন : মাসে এক লাখ ৯০ হাজার ইউরো

কাজ : প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় সম্পদ কর্মীরা। এদের যোগ্যতা বাড়ানো এবং সুষ্ঠু সমন্বয় সাধনের কাজ করেন মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা নির্বাহী। তাঁরা কর্মীদের পথের বাধাগুলো দূর করেন। তাদের কাজের পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করেন এবং তাঁদের প্রয়োজন মতো চাহিদার জোগান দেন।

যোগ্যতা : নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা থাকতে হবে, সাথে কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা। মানবসম্পদ বা শ্রমিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট থাকলে কাজ পাওয়া সহজ হবে।

৬. নেদারল্যান্ডস

পেশা : ব্যবস্থাপনা পরিচালক

বেতন : দেড় লাখ ইউরো

কাজ : প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে এরা প্রতিষ্ঠানের কাজের গতি বৃদ্ধি করেন। ব্যবস্থাপনার পুরো দিকটাই এরা দেখভাল করেন। বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানদের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। বিভিন্ন বিভাগের কাজ তদারক করেন, ভুল ধরিয়ে দেন, তা সংশোধনের উপায়ও বাতলে দেন।

যোগ্যতা : বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রি থাকতেই হবে।

One thought on “কোন চাকরিতে বেতন বেশি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.