পেট্রোলবোমা নাশকতা এবং গনহত্যার জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবী বিএনপির

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক তদন্তের মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল গণহত্যা, বিচারবহির্ভুত হত্যা, অপহরণ, পেট্রলবোমার নাশকতা, সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সহিংসতায় জড়িতদের শনাক্ত ও বিচার করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
জোটের পক্ষে আজ এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা জোটের পক্ষে চলমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সকল পর্যায়ে জোটের নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহবান জানিয়ে এসেছি। শাসক শ্রেণীই গণআন্দোলনকে কলুষিত করে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকা- হিসেবে রুপদানের কুৎসিত অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, দমন-পীড়ণের নোংরা অজুহাত সৃষ্টির কুমানসেই সরকারী সন্ত্রাসীরা পেট্রলবোমাসহ সকল নাশকতা চালিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী পেট্রলবোমা, আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেলসহ ধরা পড়লেও সরকারি নির্দেশে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটের অসংখ্য নেতাকর্মীকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে পেট্রলবোমাবাজ সাজানো হচ্ছে। নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায় জঘন্য কায়দায় স্বীকারোক্তি আদায় করা হচ্ছে।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিচারবহির্ভুত হত্যা, গণহত্যা, জোরপূর্বক অপহরণ ও বিভিন্ন নৃশংস কায়দায় আন্দোলনকারীদের হত্যাকে জায়েজ করার জন্যই-নাশকতার এই নীল নক্শার বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
কিন্তু শাসকশ্রেণীর স্মরণে রাখা উচিৎ-রাষ্ট্রীয় শ্বেতসন্ত্রাস, গণহত্যা ও সহিংসতার বিভৎস পরিবেশ তৈরি করেও জনগণের ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করা যাবে না। জনগণের প্রবল শক্তির কাছে নতি স্বীকার করা ছাড়া অবৈধ সরকারের কোনো গত্যন্তর থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, অজ¯্র নির্যাতনের শৃঙ্খল ভেঙে এই আন্দোলন এখন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে অগ্রসরমান। এই আন্দোলন গণতন্ত্র মুক্তি ও গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। অত্যন্ত সংযম ও সাহসিকতার সাথে শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলনকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপণীত করার কন্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করে বিজয় সুনিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। ব্যাপকভিত্তিক সামাজিক পরিবর্তনে বৃহৎ জাতীয় স্পৃহা পূরণে আজ সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ।
বিএনপির এই যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, বাক-ব্যক্তি ও গণমাধ্যমসহ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই আন্দোলনের মূলমন্ত্র। বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জাতীয় আকাঙ্খা পূরণ করা সম্ভব। অন্যথায় একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার কবলে নিপতিত হবে দেশ ও জাতি।
তিনি বলেন, প্রকৃত অর্থে ক্ষমতা চিরস্থায়ীকরণের আওয়ামী উগ্র বাসনাই চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের মূল কারণ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্তির পক্ষে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তই জাতীয় জীবনে দুর্যোগের উৎপত্তি। সুতরাং দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে রাজনৈতিক সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যেই বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পালনের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ সংগ্রামী দেশবাসীকে আহবান জানান সালাহ উদ্দিন আহমেদ।

৩১ thoughts on “পেট্রোলবোমা নাশকতা এবং গনহত্যার জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবী বিএনপির

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *