আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীরের’ মর্যাদা দেবার ঘোষনা একটি পাশবিকতা

জনাব সালাউদ্দিন আহমেদ
একজন আইনজীবি হিসাবে আপনি আইন মেনে চলেন না। প্রচলিত আইন যদি সভ্যতা, শৃংখলা, ন্যায় প্রতিষ্টা করতে না পারে তাহলে আপনি সেই আইন ভেঙ্গে যে আইন ন্যায় প্রতিষ্টা করবে সেরকম নতুন আইন প্রতিষ্টা করতে পারেন না । আপনি ন্যায়ের আইন প্রতিষ্টা করতে চান না কারন প্রচলিত ঘুনেধরা আইন আপনার নিজের ব্যবসাতে মুনাফার জন্য সাহায্য করে। আপনি নিজে লুকিয়ে থাকেন, অপেক্ষা করে আপনার চুরি, ডাকাতি, দুর্নীতি করার সুযোগের। আপনার দলের কর্মীদের যখন বেইআইনীভাবে গ্রেফতার, নির্যাতন ও হত্যা করা হয় তখন আপনি নিহত কর্মীদের বীর, মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে খেতাব দেবার জন্য ঘোষনা দেন। আপনি এই ঘোষনা দেন কারণ আপনি নিজে একজন অপরাধী। আপনার কর্মীদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য আপনি চিন্তা করেন না।আপনি চান আপনার দলের কর্মীদের হত্যা করা হোক, আপনি চান এইভাবে সরকারের প্রতি মানুষ বীতশ্রদ্ধ হোক, আপনি চান এইভাবে সরকার বদল হোক, আপনি চান আপনার দলের কর্মীদের লাশের উপর দিয়ে আপনি আবার আপনার ক্ষমতা ফিরে পান আবার হালুয়ারুটি খাবার আর দুর্নীতি করার মৌসুম ফিরে আসুক। সেটাই আপনি চান সালাউদ্দীন আহমেদ।

একজন আইনজীবি হিসাবে আপনার উচিৎ ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা।
আপনার বিএনপি সরকারই ক্রসফায়ারের পুনঃপ্রতিষ্টা করে।
ক্রসফায়ারের জন্মদাতা পিতা ছিল শেখ মুজিবুর রহমান।
বিএনপি ছিল ক্রসফায়ারের দায় মা।
আর এখন শেখ হাসিনা ক্রসফায়ারকে সন্তান হিসাবে বুকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশের দরিদ্র ও মেধাবী ছেলেদের হত্যা করছে।

এলিটেরা সবাই লুকিয়ে আছে ঠিক আপনার মত। সরকারী দল আপনার এই ঘোষনার সুযোগ নিয়ে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করছে । আপনার কর্মীদের উপরে দোষ চাপাচ্ছে। পথে বেরুলেই বিশদলের কর্মীদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত কর্মীদের পরিবারের কাছে লাখ লাখ টাকা দাবী করছে আর না পেলেই তাদের শরীরে ১৭টা বুলেট ঢুকিয়ে দিয়ে বন্দুক যুদ্ধের গল্প বানিয়ে পথে পথে লাশ ফেলে রাখছে। আর আপনি এইসব নিহত ছেলেদের মুক্তিযোদ্ধা ও বীর খেতাবে ভূষিত করার জন্য ঘোষনা দিচ্ছেন।

আপনার দল বিএনপীর ছেলেরা বা বিশদলের যেকোন কর্মী গ্রেফতার হবার পরে বিএনপীর আইনজীবিরা কেন যার যার এলাকাতে গ্রেফতারকৃত ছেলেদের পক্ষে পুলিশের বিরুদ্ধে বেআইনী গ্রেফতার, নির্যাতন, ব্ল্যাকমেইল, হত্যা, ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে মামলা করছেনা?

তাহলে কি আপনি বলতে চান দেশ থেকে আইন আদালত উঠে গেছে ?
তাহলে কি আপনি বলতে চান পুলিশ এখন আর আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী নাই এখন ওরা সাধারন খুনী ও অপরাধী ?
তাহলে আপনিসহ বিএনপীর সকল আইনজীবি নিজেদের আইনজীবি বলা থেকে বিরত থাকেন আর আইনের সার্টিফিকেট রাস্তায় এনে পেট্রোল বোমা দিয়ে জ্বালিয়ে দেন। কারণ অইগুলা এখন গার্বেজ।

আইন পড়ে আপনেরা আইন রক্ষা করতে পারেননি। আইনের শাসন প্রতিষ্টা করতে পারেননি। জনগনের জীবনের নিরাপত্তা দেওয়া তো দূর নিজেদের কর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারেননি । উলটা কর্মীদের হত্যা করানোর জন্য বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন লোভনীয় “বীর” খেতাব দিবেন বলে। “মুক্তিযোদ্ধা” খেতাব দেবার জন্য লোভ দেখাচ্ছেন। ১৯৭২ সালে ১৯৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা কি হয়েছিল সেটা সবাই জানে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধারা আপনার মত সুবিধাবাদী লোকের কথায় যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েননি। তারা দেশপ্রেমিক ছিলেন সেজন্য দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। “বীর” আর “মুক্তিযোদ্ধা” শব্দগুলো দিয়ে এখন আপনি নোংরা ব্যবসাতে নেমেছেন। কারণ আপনার সাথে শেখ হাসিনার কোন পার্থক্য নাই। আপনার সাথে খুনী পুলিশ বাহিনীর কোন পার্থক্য নাই। “বীর” আর “মুক্তিযোদ্ধা” কাকে বলে আপনে জানেননা।

কারণ আপনি এখন নিজে ক্ষমতায় যেতে চান সেজন্য আপনার কর্মীদের জীবন দেবার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। লোভ দেখাচ্ছেন। পুলিশের গুলিতে ওরা মরলে আপনে “বীর” খেতাব দিবেন। আপনে মরেন আর আমার উপর বিশ্বাস রাখেন – আমি নিজে বাংলাদেশে ফিরে এসে আপনার লাসের উপরে “বীর” লিখে একটা ফুলের তোরা রাখবো ।

মরার পরে আপনের দলের কর্মীরা দেখবেনা আপনি কি খেতাব দিলেন। একটি ছেলেকে যখন হত্যা করা হয় তখন সেই ছেলেটির মাবাবা ও প্রিয়জনদের ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতি আপনি পূরণ করতে পারবেন না। আপনার “বীর” খেতাব সেই ক্ষতি পূরণ করতে পারবেনা। আপনার ছেলে বা মেয়ে থাকলে তাদের পাঠান গ্রেফতার হবার জন্য। তাদেরকে নির্যাতন করুক পুলিশ হাজতে । তাদেরকে পুলিশ হাজত থেকে ছাড়াবার জন্য আপনি জমিজমা গহনা বিক্রি করেন। দাবীকৃত টাকা পুলিশকে দিতে না পারার জন্য আপনার ছেলে বা মেয়েকে পুলিশে ১৭টা বুলেট বিদ্ধ করে হত্যা করুক। বিশ্বাস করেন আমি ওদের “বীর” খেতাব দিমু। আপনে তখন বুঝতে পারবেন “বীর” খেতাব কিভাবে নিহত সন্তানের অভাব পূরণ করতে পারে।

পাশবিকতার এক নতুন রুপ দেখালেন। আগে জানতাম কুৎসিত চেহারার মানুষের মন কুৎসিত হয় এখন দেখলাম সুন্দর চেহারার নীচে কি নির্মম পশু লুকিয়ে আছে।

৪ thoughts on “আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীরের’ মর্যাদা দেবার ঘোষনা একটি পাশবিকতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *