গত নির্বাচন ছিল ‘ব্যর্থ নির্বাচন’

ঢাকা: বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত গত জাতীয় নির্বাচনকে ‘ব্যর্থ নির্বাচন’ বলে অভিহিত করেছে ইলেক্টোরাল ইন্টগ্রিটি প্রজেক্ট-ইআইপি নামের একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্প। প্রকল্পটি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয়। ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি তেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বিশ্বের ১০৭টি দেশের ১২৭টি নির্বাচনের ওপর ভিত্তি করে এই অভিমত ব্যক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে দেশের অভ্যন্তরে চলমান সঙ্কটের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় জরিপে। জরিপের নির্বাচনী সততার ধারণা সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিক থেকে ১৪তম।

প্রকাশিত জরিপের ফলাফল অংশে অনেকগুলো ব্যর্থ নির্বাচন বড় ধরনের বিপদ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করা হয়। যেসব দেশের ব্যর্থ নির্বাচন ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের নাম সবার আগে। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে বিরোধী দলগুলোর বর্জনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ‘ফল হিসাবে ১৫৩টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, প্রধানত আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়।’ ওই নির্বাচনে কমপক্ষে ২১ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্বাচন আন্তর্জাতিক মান পূরণে কতটা সক্ষম হয়েছে, তা যাচাইয়ের জন্য নির্বাচনী বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ত্রুটিপূর্ণ ও ব্যর্থ নির্বাচনগুলোর ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে। জরিপে বলা হয়, নির্বাচনে ত্রুটি পুরো প্রক্রিয়াটির যেকোনো পর্যায়ে ঘটতে পারে এবং তা বিশ্বাসযোগ্যতার সংকট সৃষ্টি করতে পারে। বিভিন্ন দেশের নির্বাচন পর্যালোচনার ভিত্তিতে বলা হয়, প্রায়শই দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে খারাপ সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে প্রচারণার পর্যায়ে। এগুলো মূলত ঘটছে রাজনৈতিক অর্থায়ন ও সংবাদমাধ্যমে প্রচারণার ক্ষেত্রে।

জরিপের ফল অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ পাঁচটি নির্বাচন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে মিসর, মোজাম্বিক, আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং বাহরাইনের নির্বাচন। সবচেয়ে ভালো পাঁচটি নির্বাচন হয়েছে লিথুয়ানিয়া, কোস্টারিকা, সুইডেন, স্লোভেনিয়া ও উরুগুয়েতে। সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সততার (ইন্টেগ্রিটি) বিচারে ৪২তম এবং কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে ৪৫তম অবস্থানে দেখানো হয়েছে।

১৪ thoughts on “গত নির্বাচন ছিল ‘ব্যর্থ নির্বাচন’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *