মাশরাফির এক অতিপরিচিত ‘শত্রু’ আছে। সে কোনোভাবেই মাশরাফিকে ছাড়তে চায় না। সুযোগ পেলেই আক্রমণ করে। কখনো নাজেহালও করে। আজ পর্যন্ত সে সাত বার এসেছে। তার কারণেই মাশরাফির টেস্ট খেলা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ওয়ানডেও হুমকির মুখে পড়েছিল!
যারা মাশরাফি সম্পর্কে এতটুকু খোঁজ খবর রাখেন, তারা এতক্ষণে ‘শত্রু’র নামটা ধরে ফেলেছেন-ইনজুরি! হ্যাঁ, এই ‘বদমায়েশ’টাই মাশরাফির ক্যারিয়ারটাকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে। কিন্তু দমে যাননি নড়াইলের ছেলেটি। ছেঁড়া দিনগুলোকে বিনিসুতোর মালায় গেঁথে সামনে এগিয়ে গেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত সার্জন ডেভিড ইয়াং পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছেন, মাশরাফির ফিরে আসা আমাকে অবাক করে!
ইনজুরিকে হারিয়ে মাশরাফি শুধু ফিরেই আসেননি। জয়ও করেছেন। করছেন। আফগানদের সঙ্গে খেলার আগের দিনও অনুশীলনে হালকা চোট পেয়েছিলেন। মাঠে নেমেছিলেন হাঁটুতে বিশেষ ব্যান্ড পরে। যেটা সাধারণত ভলিবল খেলোয়াড়দের পরতে দেখা যায়।
মাশরাফির মানসিক শক্তির মাহাত্য বর্ণনা করতে আর কোনো ‘মুখড়া’র প্রয়োজন নেই। ‘অন্তরাটা’ও নিষ্প্রয়োজন।
এবারের বিশ্বকাপে টাইগারদের প্রথম জয়ে কার অবদান বেশি; তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তিনজনই ম্যাচ সেরার দাবিদার-সাকিব, মুশফিক, মাশরাফি। প্রথম দুজনের থেকে মাশরাফি অন্য যায়গায় এগিয়ে। সতীর্থদের সাহস যোগানো আর নেতৃত্ব গুণে সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন তিনি। বাংলাদেশ দলে একটা ‘মিথ’ চালু আছে। মাশরাফির প্রথম স্পেলে লুকিয়ে থাকে জয়ের গন্ধ। গতকালও সেটা আরেকবার প্রমাণিত হল। শুরুতেই ত্রাস ছড়িয়ে দিয়েছিলেন আফগান শিবিরে। যে ত্রাস আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি হাজার যুদ্ধ দেখা আফগানরা।
খেয়াল করে থাকবেন, তিন উইকেট পড়ার পর আফগানরা খোলসের ভেতর ঢুকে গিয়েছিল। সিঙ্গেল নিয়ে ম্যাচ বের করার চেষ্টা করছিল তারা। ক্রিকেটের ভাষায় যাকে বলে ‘বল-টু-বল সিঙ্গেল।’
মাশরাফি এসময় বোলিং-ফিল্ডিংয়ে বৈচিত্র্য আনেন। ফলও আসে হাতে নাতে। সাব্বিরের থ্রতে ভেঙে যায় সেই জুটি।
আরেকটু ক্রিকেটীয় চোখে ম্যাচ দেখে থাকলে, নিশ্চয়ই দেখেছেন তাসকিন একটানা অফ স্ট্যাম্পের বেশ বাইরে বল করছিলেন। এটাও ছিল মাশরাফির একটা প্লান। রুবেলকে নিয়ে নিজে স্ট্যাম্প-টু স্ট্যাম্প বল করেছেন। আর তাসকিনকে দিয়ে বাইরে বল করে টোপ দিচ্ছিলেন। যাতে তাকে খেলতে যেয়ে ব্যাটসম্যানরা বোকা বনে যান। কাজেও দিয়েছিল এই প্লান। তবে সাকিবদের ক্যাচ মিসের কারণে সেই প্লান তেমন কাজে আসেনি।
চাঁদের গায়েও কলঙ্ক আছে। মাশরাফিরও ভুল থাকতে পারে। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান মমিনুলকে শেষ দিকে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা উঠতে পারে। সাকিব ছাড়া কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার না খেলানোয়ও বিতর্ক হতে পারে। কেউ কেউ এটাকে পাগলামিও বলতে পারেন। তাতে কী আসে যায়। পাগলামিতে যখন জয় আসে, তখন ধন্য যে হয় সেই পাগলামি!
Md Azizul liked this on Facebook.
Md Fahad Abdullah liked this on Facebook.
Imtiaz Dibos liked this on Facebook.
Mamun Ahmed liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Ali Imran Shamim liked this on Facebook.