২০ দলের কঠোর আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে সরকারের অনেক মন্ত্রী এমপি,নেতা সুবিধাভোগী সরকারী কর্মকর্তা ভয়ে পালিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, ফুফাতো ভাই শেখ সেলিম, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিদেশে পালিয়ে গেছেন। পরিবার পাঠিয়ে পালানোর অপেক্ষায় আছেন আওয়ামীলীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্বাস্থমন্ত্রী নাসিম, সাবেক বনমন্ত্রী হাসান মাহমুদসহ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েলের ভাগ্নে ভোলার মেয়র মনিরুজ্জামান। এদিকে আরো দেড়মাস আগেই পালিয়ে গেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় সেক্রেটারি নাজমুল।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আরাফাতের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, তার বন্ধু সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি সেমিনারে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু হঠাত করেই বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তার জন্য তাকে আমেরিকায় চেলে যেতে হয়।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকতে কি কারণে প্রধানমন্ত্রী পুত্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলো- একরম প্রশ্নের উত্তরে এই প্রতিবেদককে তিনি জানান, ২০ দলের টার্গেটে রয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়। খালেদা জিয়া যেভাবে অনঢ় অবস্থায় রয়েছে তাতে শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবি হয়ে পরেছে-এরকম তথ্যই দিচ্ছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। আর যে কারণেই আগেভাগে প্রধানমন্ত্রী তার সব আত্মীয় স্বজনকে বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে শাহজালাল এয়ারপোর্টর পুলিশের এক সদস্য জানান, এবার প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয়ের সফরের সময় সাথে ছিল অনেকগুলো লাগেজ। তবে এতোগুলো লাগেজে কী কী ছিল সে সম্পর্কে জানেন না তিনি।
কোটি কোটি ডলার অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ইন্টেভেস্টিগেশন করছে। এরইমধ্যে বড় বড় অনেকগুলো লাগেজ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পলায়নকে স্বাভাবিক চোখে দেখছে না স্বয়ং যুক্তরাষ্ট্র এ্যামবেসিও।
শেখ হাসিনার কন্যা পুতুলকেও আগেভাগে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
শেখ সেলিমের পরিবার পালিয়ে গেছে আমেরিকায়।
বাংলাদেশে হাসিনার অবস্থা বেগতিক দেখে আওয়ামী প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও হাসিনার ফুফাত ভাই শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার স্ত্রী ফাতিমা সেলিমকে পাঠিয়ে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ফাতেমা সাথে নিয়ে গেছে তার ছোট বোন ও জামাইসহ আরো ১৬ জন।
এরপরে অবস্থা খারাপ দেখলে সেলিমও বিদেশে চলে যাবে বলে জানিয়েছে ফাতেমা। সেলিমের বউ ও স্বজনরা চুড়ান্তভাবেই দেশ ছাড়ছে বলেও জানান সেলিমের ছোটবোন।
বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, সেলিমের আত্মীয়রা বর্তমানে বসবাস করছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অংগরাজ্যে। সেখানকার হিউস্টন ও অস্টিন শহরে বাড়ি কিনার চেষ্টা করছে তারা। নিরাপত্তার জন্য শেখ সেলিমের স্ত্রী বাসা নিয়েছে যেখানে বাঙ্গালি কম এরকম এলাকায়।
সম্প্রতি এক শনিবারে হিউস্টন শহরের “অল বেঙ্গল সুইটস” দোকানে খেতে গিয়ে আড্ডার ছলে সেলিমের পরিচিত সজীব চৌধুরীর কাছে ফাতেমা সেলিম বাংলাদেশে তাদের অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে আসার বিষয়ে জানান।
সজীব চৌধুরীর কাছে শেখ সেলিমের স্ত্রী বলেন,
“বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত ভীতিকর। অবরোধ ও হরতালের কারনে ঘর থেকে বের হ্ইতে পারতাম না। এমনকি ডাক্তারের কাছেও যেতে পারি নাই। এখন সেলিম সাহেবও খুব ভয়ের মধ্যে আছে। সে নিজেই জানে না কখন কি বলছে। সংসদে বিএনপিকে গালাগালি করে এসে বাসায় বিড় বিড় করে, খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি, কখন কি বিপদ নামে। এই নিয়া পুরা ফ্যামিলির মধ্যে বিরাট অশান্তি চলতেছে।
আত্মীয়স্বজনরা অনেকেই বলাবলি করছে, হাসিনা আপার কারনেই এসব হচ্ছে।
সে কেনো জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখছে? ছেড়ে দিচ্ছে না কেনো?”
শেখ হাসিনা আরেক ফুফাত ভাই শেখ হেলাল অনেকদিন ধরেই পরিবারসহ ব্যাংককে আত্মগাপনে রয়েছেন। পিলখানার হত্যাকান্ডের নায়ক তাপসও আত্মগোপনে রয়েছেন বেশ কয়েকদিন।
পালানোর তালিকায় রয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হওয়া সত্বেও কাউকে না জানিয়ে সিঙ্গাপুরে চলে যান ইনু। ইনুর পলায়নে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে শেখ হাসিনা। তিনি ইনুকে শাসিয়ে কথা বলেন। বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনা ইনুর পলায়নে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি ইনুকে বলেন, আপনার বুদ্ধি পরামর্শে আজকে আমার এ অবস্থা আর আপনি পালিয়েছেন। তখন ইনু বলেন, তিনি পালাননি চিকিতসার জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন। শেখ হাসিনা রাগতস্বরে বলেন, চিকিতসার জন্য গেলে আমাকে না জানিয়ে গেলেন কেন? ইনু বলেন, আমি শিগগিরই চলে আসবো এবং সংবাদ সম্মেলন করবো। শেখ হাসিনা বলেন, আপনার কাছ থেকে যে কতকিছু শিখতে হবে। জাসদের কাছ থেকে গণতন্ত্র শিখতে হয়, এখন শিখতে হবে চিকিতসা থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলন করার অভিনব বিষয়টি।
এয়ারপোর্ট সূত্র জানিয়েছে, তথ্যমন্ত্রীকে তিনি সিঙ্গাপুরে যাওয়ার সময় এয়ারপোর্টে দেখেছেন। এ সফরে তিনি খুবই গোপনীয়তা রক্ষা করেছেন। তার মুখ কালো দেখা গেছে এবং চিন্তিত দেখা গেছে বলেও জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ভাগ্নে ভোলার পৌরমেয়র মনিরুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে ২ টি বাড়ি কিনেছেন। সেখানে তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের পাঠিয়ে দিয়েছেন। সরকারের অবস্থা আরেকটু বেগতিক হলেই অবৈধ সরকারের মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ,তার ভাজিতা বোরহান উদ্দিন – দৌলতখানের সাংসদ মুকুল ও তোফয়েল ভাগ্নে ভোলার পৌর মেয়র মনির পালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছে ভোলা-৪ আসনের আওয়ামীলীগ সাংসদ আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের ব্যক্তিগত সহকারী।
আওয়ামীলীগের মুখপাত্র মাহবুবুল আলম হানিফ লন্ডনে ২টি বাড়ি কিনেছেন। সেখানে তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও ভাতিজি ইতিমধ্যেই চলে গেছেন। হানিফের ভাতিজি বন্যা এই প্রতিবেদককে জানান, চাচ্চু বছর দুয়েক আগে বাড়ি কিনে। তবে ৫ জানুয়ারীর আগেই চাচী ও ভাইয়ারা দেশ ছেড়ে লন্ডনে চলে আসে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় সেক্রেটারি নাজমুল বিরোধীজোটকে ন্যাড়ি কুত্তার মতো পিটানোর হুমকি দিলেও আওয়ামীলীগের বেগতিক অবস্থা দেখে তিনি আরও আগেই পালিয়ে গেছেন।
৭১ টেলিভিশনের এক রিপোর্টার জানান, পুলিশ ও গণমাধ্যমই সরকারকে এখনও টিকিয়ে রেখেছে। বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। সরকার অস্থির হয়ে গেছে। বিরোধীজোটের আন্দোলনে সরকার কাবু হয়ে গেছে। তথ্যমন্ত্রণালয় থেকে সরকারের অবস্থাকে নেতিবাচকভাবে দেখাতে নিষেধ করা হয়েছে। সংবাদের সেন্সর করে সরকার এখনও শক্তিশালী অবস্থাতে রয়েছে এরকম চিত্র দেখাতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এটিএন বাংলার সিনিয়র এক রিপোর্টার জানান, আওয়ামীলীগের অসংখ্য নেতাদের পাসপোর্ট অফিসে যাতায়াতের হিড়িক পড়তে দেখা গেছে। সেখানে হানিফ, কামরুল, নাসিম ও হাসান সাহেবদের ও তাদের স্বজনদেরও দেখা গেছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, পালানোর তালিকায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসংখ্য কর্মকর্তারা ও তাদের পরিবারও। র্যা ব, পুলিশ ও বিজিবির অতি উতসাহী কর্মকর্তারা তাদের পরিবারকে আগেই বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। অনেকে চলে যাবার প্রক্রিয়াতে রয়েছে। পাসপোর্ট অফিস ও ভিসা অফিসে তাদের দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
সাবেক এক আওয়ামীলীগ নেতা বর্তমান নাগরিক ঐক্যের নীতিনির্ধারক জানান, সরকারের যারা সুবিধাভোগী ও এক্সট্রিম পর্যায়ের রয়েছেন তারা তাদের পরিবারকে ইতোমধ্যে বিদেশে সরিয়ে দিয়েছেন। সরকারের কলকব্জা নড়েচড়ে গেছে। খালেদা জিয়া আন্দোলন অব্যাহত রাখলে এ মাসেই সরকার পরে যাবে। মিডিয়া দিয়ে আর টিকে থাকতে পারবে না। শেখ হাসিনার পায়ের নিচে মাটি নেই। জনগণতো ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর থেকে নেই। সুবিধাভোগীরা তাকে এতোদিন রক্ষা করলেও তারাও পালানোর পথ ঠিক করে রেখেছে। ২০ দলের আন্দোলন অব্যাহত থাকলে শেখ হাসিনা হয় ৭৫ এর শেখ মুজিবের মতো ভাগ্যবরণ করবে নচেত ওয়ান ইলেভেনের মতো পালিয়ে যাবে। আর ১৪ দলের বাকিরা নেতারা পালানোর অগ্রিম টিকিট পকেটে নিয়ে ঘুড়ছেন। তবে তারা পালানোর সময় বা সুযোগ পাবেন কীনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Kh Rubel liked this on Facebook.
Zahidul Islam liked this on Facebook.
Abdul Kuddus Mizi liked this on Facebook.
Md Azizul liked this on Facebook.
Mamun Ahmed liked this on Facebook.
Shah Jalal liked this on Facebook.
Bakaul Ahmed liked this on Facebook.
Rasul Nimer liked this on Facebook.
Imtiaz Dibos liked this on Facebook.
Md Nobi liked this on Facebook.