নিউজিল্যান্ড এর সাথে লড়াই করে হেরেছে স্কটল্যান্ড

বোলারদের দাপটে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট নিউ জিল্যান্ড। স্কটল্যান্ডের দেওয়া ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেটে জিতেছে টুর্নমেন্টের সহ-আয়োজকরা।

মঙ্গলবার ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৩৬ ওভার ২ বলে ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যায় স্কটল্যান্ড। জবাবে ২৪ ওভার ৫ বলে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিউ জিল্যান্ড।

শুরু আর শেষের ধসে লড়াই করার মতো পুঁজি গড়তে পারেনি স্কটল্যান্ড। ১২ রানে প্রথম আর ১৩ রানে শেষ চার উইকেট হারায় দলটি। হারলেও দারুণ লড়াই করে আইসিসির সহযোগী দেশটি।

১৪৩ রানের ছোট লক্ষ্যে নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে পারেননি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে এক সময় অস্বস্তিতে পড়েছিল দলটি। ফিল্ডারদের কাছ থেকে স্কটল্যান্ডের বোলাররা আরেকটু সহায়তা পেলে মাইক হেসনের দলের জন্য কাজটা আরো কঠিন হতে পারতো।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নিউ জিল্যান্ডের। ৪৮ রানে তাদের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে ফিরিয়ে দেন ইয়ান ওয়ার্ডল। দুই জনই ম্যাথু ক্রসের গ্লাভসবন্দি হন।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৮ রানে জেতা ম্যাচে মাত্র ১৪ রান করেছিলেন রস টেইলর। এবার দুই অঙ্কেই পৌঁছাতে পারেননি তিনি। মাজিদ হকের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে মাত্র ৯ রান করেন তিনি।

এরপর ফিরে যান দারুণ ছন্দে থাকা কেন উইলিয়ামসও। দলের সংগ্রহ একশ’ পার হওয়ার পর জস ডেভির বলে এগিয়ে এসে সজোরে হাঁকাতে গিয়ে ক্রসের তৃতীয় ক্যাচে পরিণত হন তিনি।

ওয়ার্ডলর ফিরতি স্পেলে ক্রসের গ্লাভসবন্দি হয়ে বিদায় নেন গ্র্যান্ট এলিয়ট।
একবার জীবন পেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি অলরাউন্ডার কোরি অ্যান্ডারসন। ডেভির বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন তিনি।

জয়ের খুব কাছে গিয়ে লুক রনকির বিদায় অস্বস্তিতে ফেলে নিউ জিল্যান্ডকে। তবে লক্ষ্য বড় না হওয়ায় অ্যাডাম মিল্ন ও ড্যানিয়ল ভেটরি স্বস্তির জয় এনে দেন দলকে।

স্কটল্যান্ডের ডেভি ও ওয়ার্ডল তিনটি করে উইকেট নেন।

এর আগে ম্যাচ সেরা ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদির দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি স্কটল্যান্ডের। মাত্র ১২ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।

দ্বিতীয় ওভারেই পরপর দুই বলে ক্যালাম ম্যাকলয়েড ও হ্যামিশ গার্ডিনারকে ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান বোল্ট। তার হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেয়া ম্যাট মাচান পৌঁছান অর্ধশতকে।

পঞ্চম ওভারে পরপর দুই বলে কাইল কোয়েটজার ও অধিনায়ক প্রেস্টন মমসেনকে বিদায় করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান সাউদি। তার হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেয়া রিচি ব্যারিংটনও পান অর্ধশতক।

পঞ্চম উইকেটে মাচান ও ব্যারিংটনে প্রতিরোধ গড়ে স্কটল্যান্ড। ৯৭ রানের চমৎকার মাচানকে ম্যাককালামের ক্যাচে পরিণত করে এই জুটি ভাঙার কৃতিত্ব অ্যান্ডারসনের। ৫৬ রান করা মাচানের ৭৯ বলের ইনিংসটি ৭টি চার ও ১টি ছক্কা সমৃদ্ধ।

নিজের পরের ওভারে ব্যারিংটনকেও ফেরান অ্যান্ডারসন। ৮০ বলে খেলা ব্যারিংটনের ৫০ রানের ইনিংসটি সাজানো ৪টি চার ও ১টি ছক্কায়।

এক সময়ে স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১২৯ রান। কিন্তু এরপর মাত্র ১৩ রানে শেষ চার উইকেট হারানোয় দেড়শ’ পর্যন্তও যেতে পারেনি বিশ্বকাপে কোনো জয় না পাওয়া দলটি।

ক্রসকে রনকির গ্লাভসবন্দি করে নিজের তৃতীয় উইকেট নেন অ্যান্ডারসন। এরপরই আঘাত হানেন ড্যানিয়েল ভেটরি। এই অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার নেন স্কটল্যান্ডের শেষ তিন উইকেট।

ম্যাচের তৃতীয় বোলার হিসেবে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নেন ভেটরি। শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করায় হ্যাটট্রিক করার সুযোগ পাননি তিনি।

স্কটল্যান্ডের পাঁচ জন ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হন। এদের চার জন আউট হন মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে। ওয়ানডেতে এ নিয়ে মাত্র তৃতীয়বার কোনো ইনিংসে চার ব্যাটসম্যান প্রথম বলে আউট হলেন।

অ্যান্ডারসন ও ভেটরি নেন তিনটি করে উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন বোল্ট ও সাউদি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

স্কটল্যান্ড: ৩৬.২ ওভারে ১৪২ (কোয়েটজার ১, ম্যাকলয়েড ০, গার্ডিনার ০, মাচান ৫৬, মমসেন ০, ব্যারিংটন ৫০, ক্রস ১৪, ডেভি ১১*, টেইলর ৪, মাজিদ ০, ওয়ার্ডল ০; অ্যান্ডারসন ৩/১৮, ভেটরি ৩/২৪, বোল্ট ২/২১, সাউদি ২/৩৫)

নিউ জিল্যান্ড: ২৪.৫ ওভারে ১৪৬/৭ (গাপটিল ১৭, ম্যাককালাম ১৫, উইলিয়ামসন ৩৮, টেইলর ৯, এলিয়াট ২৯, অ্যান্ডারসন ১১, রনকি ১২, ভেটরি ৮*, মিল্ন ১*; ডেভি ৩/৪০, ওয়ার্ডল ৩/৫৭, মাজিদ ১/২১)

ম্যাচ সেরা: ট্রেন্ট বোল্ট।

আতিক/প্রবাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *