দৈনিক প্রথম আলো হচ্ছে ভন্ড ছবির চিত্রনাট্য : আসিফ আকবর

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে জনপ্রিয় গায়ত আসিফ আকবর তার ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন যা বর্তমান সময়ের গণমাধ্যমের চরিত্র তুলে ধরে। পাঠকদের জন্য সেই স্ট্যাটাসটি এখানে প্রকাশ করা হলো। এবং পরবর্তিতে তিনি আরো দু’টি স্ট্যাটাস দেন যা থেকে দৈনিক প্রথমআলোর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। ২০০৮ সাল থেকেই সকল প্রকার এ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান বর্জন করে এসেছি। গত বছর হাতে পায়ে ধরে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ আমাকে মেরিল প্রথম আলো এ্যাওয়ার্ডে নিয়ে গেলো। আমার পাগলা ভক্তদের ভোট স্রোতে এ্যাওয়ার্ডটা পেয়ে গেলাম ষষ্ঠ বারের মত।

তাদের তিনটা ভুল রিপোর্টের প্রতিবাদ করায় এবার নমিনেশনই দেয়নি। আমার ফ্যানপেজ এর এডমিন ইলিয়াস আমাকে চাপ দিচ্ছিলো এবারো ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে পুরস্কার ছিনিয়ে আনতে। আমি না করেছি ,দেখতে চেয়েছি প্রথম আলোর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মচারীদের কর্দয চেহারাটা। সন্দেহ সঠিক প্রমানিত । বিস্তারিত আপনাদেরকে পরে অবশ্যই জানাবো। প্রথম আলোকে বলতে চাই, বাংলাদেশের কিছু দালাল নপুংসক শিল্পী ছাড়া সবাই আপনাদের ঘৃণা করে। ইচ্ছে করলে একটা স্পন্সর নিয়ে এটাও জরিপ করে দেখতে পারেন। আবার যারা প্রথমআলোর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যায়, তারা বেশীর ভাগ ভয়ে যায়। এই ভয়টাকে কাজে লাগিয়েই প্রথম আলো ফাও প্রোগ্রাম করে যাচ্ছে। জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়, এমন সব এ্যাওয়ার্ড আমি পেয়েছি।

সবচেয়ে বড় এ্যাওয়ার্ড শ্রোতাদের অবিরাম ভালবাসা। আসিফ আকবর আমার নাম। খুব খেয়াল করে মনে রাখবেন। ভক্তদের ভালবাসায় এ্যাওয়ার্ড গুলো পেয়েছি, তাই ফেরত দিয়ে আসিনি বা ফেলে দেইনি। শারীরিক ভাবে অসুস্থ চিত্র পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘ভন্ড’ ছবির চিত্রনাট্যই হচ্ছে দৈনিক প্রথম আলো। আবার ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালে দৈনিক প্রথমআলোকে নিয়ে নীচের স্ট্যাটাসটি দেন। মেরিল প্রথমআলো এ্যাওয়ার্ডে বেসিক পুরস্কার থাকে সাতটি। ১/আজীবন সম্মাননা, ২/ শ্রেষ্ঠ গায়ক ৩/ শ্রেষ্ঠ গায়িকা ৪/ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা–( ফিল্ম) ৫/ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (ফিল্ম) ৬/ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা-(নাটক) ৭/ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (নাটক)। তারপর অন্তত আরো পনেরটি বিশেষ ক্যাটাগরীর পুরস্কার আছে ,যেগুলো শুধু মাত্র নাট্য জগতের জন্য সীমাবদ্ধ ।

প্রথম আলোতে একজন সিনিয়র কর্মচারী আছেন যিনি জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক, নাটক লিখেন, গদ্য কার্টূন লিখে ঝি’কে মেরে মাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তার কারনেই প্রথম আলো পুরস্কারে নাটকের এতো প্রভাব, তাও নিদির্ষ্ট কিছু নাটক, টেলিফিল্ম পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রীর জন্য কোটা সীমাবদ্ধ। প্রথম আলো বিনোদন বিভাগে একসময় প্রধান ছিলেন দেশের প্রথম সারির গীতিকার কবির বকুল। তিনি নিজেও পারেন নি গীতিকার সুরকারদের পুরস্কার দেয়ার প্লাটফর্ম তৈরী করতে। আমি আমরা অনেক চেষ্টা করেছি গীতিকার সুরকারদের সন্মান আদায় করতে, কিন্তু প্রথম আলোর চোখ ও কানের ভেতর গলানো সীসা গুলো শক্ত হয়ে ফিক্সড অবস্থানে চলে গেছে। পুরস্কার তো দূরের কথা , দাওয়াত পর্যন্ত দেয়া হয়না।

তরুণ বা জুনিয়র আটির্ষ্ট যারা আছে, প্রথম আলোর নিজেদের কাজ থাকলে ডাকে, নইলে দাওয়াত দেয়া তো দূরের কথা, একটা নিউজ পর্যন্ত করেনা। অথচ বাইরে থেকে বুম্বা’দা বা নায়ক দেব অথবা বিদেশ থেকে কেউ আসলেই তাদের চামচামীর হাসিটা চওড়া হয়ে কান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ফটোগ্রাফার চলে যায় এয়ারপোর্টে। বাংলাদেশের শিল্পীদের টিস্যূ পেপারের মত ব্যবহারে প্রথম আলো আসলেই অনবদ্য। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে দৈনিক প্রথমআলো এবং মুসা ইব্রাহীমকে নিয়ে তিনি আরেকটি স্ট্যাটাসটি দেন।

পাঠক এর থেকে হয়তো কিছু খুঁজে পেলেও পেতে পারেন। মুসা ইব্রাহীমের মাউন্ট এভারেষ্ট জয়ের খবর পেয়েই আমি দুই বন্ধুকে নিয়ে চলে যাই নেপাল। কাঠমান্ডু পৌঁছেই আমি প্রথম আলো বিনোদন প্রধান কবির বকুলকে ঢাকায় ফোন দিয়ে জানতে চাইলাম আনিসুল হকের নাম্বার। মুসার এভারেষ্ট জয়ের পুরো মিশনটাই তদারক করছিলেন প্রথম আলোর বড় কর্তা ঔপন্যাসিক আনিসুল হক। তিনি তখন কাঠমান্ডু অবস্থান করছিলেন। ফোন নাম্বার পেয়ে যোগাযোগ করে মুসাকে ফুল দিয়ে গরম গরম অভিনন্দন জানালাম। বাংলাদেশের মুখ উজ্জল করা মুসা বুকের ছাতিটা চতুর্গূন করে দিয়েছিলো।

এর মধ্যে দুইবার এভারেষ্ট জয়ী এম. এ মুহিত, নিশাত মজুমদার এবং ওয়াসফিয়া নাজরীন দাবী করল মুসার এভারেষ্ট জয় সম্পূর্ন ভূয়া। তার আগে পর্যন্ত প্রথম আলোর সব প্রোগ্রামে মুসা থাকতোই। প্রথমআলো এবং মুসার এভারেষ্ট জয় যেন ছিল একসূত্রে গাঁথা। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারী ভাইকিংস কোম্পানী গ্রামীনফোন এবং প্রথম আলোর চলো বাংলাদেশ কনসার্টে এম এ মুহিতকে দেখলাম। তাজ্জব বনে গেলাম। মুসা নেই মানেই তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। নতুন টিস্যূ পেপার এম.এ মুহিত।

সমস্যাটা অন্য জায়গায়। মুসা কি আসলেই এভারেষ্ট জয় করেছিলো? এটা জানতে হবে। কারন পাঠ্যবইয়ে প্রথম এভারেষ্ট জয়ী বাংলাদেশী হিসেবে মুসার নাম লেখা হয়ে গেছে, শিক্ষার্থীরাও তাই জানে। আমরা যখন এই ব্যাপারটা নিয়ে বিভ্রান্ত,তখন প্রথম আলোর মুখে কুলুপ। মুসার এভারেষ্ট জয়ের প্রধান সমন্বয়ক আনিসুল হকের কোন বক্তব্য আজো পাওয়া যায়নি। আপনারা যদি সৎ সাংবাদিক এবং সংবাদ পত্র হয়ে থাকেন,তাহলে সত্য প্রকাশ করুন,কতটুকু নিজেরা বদলেছেন প্রমান দেখান।

আতিক / প্রবাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *