গণতন্ত্র হত্যা করে দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সরকারের ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন খুব দ্রুতই ভঙ্গ হবে বলে মন্তব্য করেছে জামায়াতে ইসলামী।
রবিবার এক বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এ মন্তব্য করেন।
এ সময় সংবিধান, মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার হরণের রাষ্ট্রীয় চক্রান্ত এই মুহূর্তে বন্ধ করে জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ডা শফিকুর বলেন, ‘সরকার সরাসরি সংবিধান লঙ্ঘন করছে। জনগণের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারকে পদদলিত করছে। মূলতঃ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র তার সাংবিধানিক কর্তৃত্ব হারিয়ে শেখ হাসিনার ব্যক্তিতন্ত্র ও একদলীয় শাসনের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও তাদের দলীয় দোসর ছাড়া কাউকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। বহু কষ্টে অর্জিত গণতন্ত্র ও দেশের সংবিধানকে কলঙ্কিত করে সরকার বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।’
জামায়াত সেক্রেটারি অভিযোগ করেন, ‘বিদেশিদের খুশি করার জন্য দেশের অধিকাংশ মানুষের নেতৃত্ব দানকারী ২০-দলীয় জোটের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী ও সহিংস হিসেবে আখ্যায়িত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রল বোমাসহ সরকার দলীয় ক্যাডাররা ধরা পড়া সত্ত্বেও পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারদলীয় ক্যাডাররা পেট্রল বোমা ফাটিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়ছে এবং নিজেদের বোমায় নিজেরাই আহত হচ্ছে। সরকারের এ ছলচাতুরি দেশের জনগণ ধরে ফেলেছে। কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে গদি রক্ষা করা যাবে না।’
ডা. শফিকুর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘সরকার যে গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করছে তার জবাব এ দেশের জনগণের নিকট তাদের দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মতিউর রহমান মতিকে হাসপাতাল থেকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। বগুড়া জেলার শেরপুরে পুলিশ গুলি করে ছাত্রশিবির কর্মী রানা আহমাদ এবং লক্ষ্মীপুরে ছাত্রশিবিরের দুই কর্মীকে আহত করেছে।’
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ‘বরিশাল পূর্ব জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান অলিদের বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার শিক্ষঙ্গণে পর্দানশীন ছাত্রীদের লেখা-পড়ার অধিকার হরণ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল থেকে বাংলা বিভাগের এমএ ক্লাসের ছাত্রী সুমী, ইংরেজি ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী শারমিন ও জান্নাতুল মাওয়াকে হল থেকে বের করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।’
এ সময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ডা. শফিকুর বলেন, মানবাধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্র হত্যা করে দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সরকারের ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন খুব দ্রুতই ভঙ্গ হবে।
আতিক/প্রবাস