সুন্দরবনে অয়েলট্যাংকার (তেলবাহী জাহাজ) ডুবির ঘটনায় দায়ীদের রক্ষায় তদন্তে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি ও সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্ট যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংগঠন দুটির নেতারা অপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা না করে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক অতি দ্রুত প্রতিবেদন জমা ও তা জনসমক্ষে প্রকাশের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, অয়েলট্যাংকার ডুবিতে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিলেও দীর্ঘ দু’মাস পরও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়নি। ওই দুর্ঘটনা তদন্তে গঠিত পৃথক দুটি কমিটির সময়সীমাও অনেক আগে শেষ হয়েছে। প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষার জন্যই প্রতিবেদন দিতে গড়িমসি করা হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক আশীষ কুমার দে বলেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নুর-উর রহমানের নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট স্থায়ী তদন্ত কমিটি সুন্দরবনে তেলবাহী জাহাজ দুর্ঘটনার দুদিন পরই তদন্ত শুরু করে। এছাড়া সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট আলাদা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের কমিটিকে সাত ও অধিদপ্তরের কমিটিকে ১৫ কার্যদিবস সময় বেধে দেয়া হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দুর্ঘটনার শিকার দুটি জাহাজই মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ ছিল। এর মধ্যে নিমজ্জিত ‘ওটি সাউদার্ন স্টার-৭’ চলাচলের মোটেও উপযোগী ছিল না। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের সঙ্গে দাখিল করা সনদে উল্লেখিত ডকইয়ার্ডটিরও কোনো অস্তিত্ব নেই। তা সত্ত্বেও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের বরিশাল কার্যালয়ের ‘প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক’ মো. মুঈনউদ্দিন জুলফিকার জাহাজটিকে সার্ভে (ফিটনেস সনদ) দেন। এছাড়া বার্ষিক সার্ভে ও সার্ভে-পরবর্তী প্রক্রিয়ায়ও গুরুতর অনিয়ম করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ভোরে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগামারী এলাকায় শ্যলা নদীতে তেলবাহী জাহাজ ‘এমটি টোটাল’ এর ধাক্কায় অপর তেলবাহী জাহাজ ‘ওটি সাউদার্ন স্টার-৭’ ডুবে যায়। নিমজ্জিত জাহাজটির ট্যাংকার ফেটে তেল ছড়িয়ে পড়ায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে সুন্দরবন।
আতিক/প্রবাস