শুরু হয়েছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসর। ময়দানী লড়াই শুরু হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর আগে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে আসরের বর্ণিল উদ্বোধনী। আসর একটি হলেও একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। দুই আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড পৃথকভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হয়েছে মেলবোর্নের সিডনি মায়ার মিউজিক বোলে। অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের অনুষ্ঠানটি হয়েছে ক্রাইস্টাচার্চে।
অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিই ছিল মূল আকর্ষণ। কেননা, বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দেশগুলোর অধিনায়ক ও টিম সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থেকেছেন এই অনুষ্ঠানে। বাংলাদেশের পক্ষে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন হেলিকপ্টারে করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিতে যোগ দিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কিছু সময় আগেই আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে হয়েছে মাশরাফিদের। যদিও ম্যাচের অভিজ্ঞতা মোটেও ভাল নয়, বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরেছে ৪ উইকেটে। তবে বিশ্বকাপের বর্ণিল উদ্বোধনীর ছন্দে চাপা পড়েছে মাশরাফিদের হারের বিষয়টি।
টেলিভিশন চ্যানেলের কল্যাণ মূলত অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিই দেখতে পেয়েছেন বিশ্বের কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। অস্ট্রেলিয়ার নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতি উপস্থানের পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সংস্কৃতিরও হাল্কা পরিবেশনা হয়েছে সিডনি মায়ার মিউজিকে বোলের বিশাল মঞ্চে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জার্সি পরে ‘চলো বাংলাদেশ, চলো বিশ্ব উঠোনে’ শিরোনামের গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন বাংলাদেশের একদল পারফরমার। আর মঞ্চের সামনে উপস্থিত অজস্র বাংলাদেশীও নেচেছে সেই গানের তালে তালে। এ সময় পিছনের জায়ান্ট স্ক্রিনে শোভা পেয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পক্ষেও পরিবেশিত হয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতির পারফরম্যান্স।
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কি কি থাকছে তা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছে আইসিসি। তবে একটা বিষয় গোপন রাখা্ হয়েছিল; বলা হচ্ছিল-গোপন বিষয়টিই হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় চমক। শেষ অবধি বৃহস্পতিবার মেলেবোর্নের অনুষ্ঠানে সেই চমকও দেখানো হয়েছে। তা একটি বড় রোবাট, যে ব্যাটসম্যানদের মতো হেলম্যাট আর প্যাড পরে ব্যাট হাতে দেখিয়েছে নানান কৎসরত।
অনুষ্ঠানটিতে ১৪ দলের অধিনায়ক ও সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের সাবেক ক্রিকেটাররাও। সুরের মূর্ছনা আর আতশবাঁজির ঝলকের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান উপজাতিদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, পপতারকা জেসিকা হিলডা মাওবো ও টিনা এরেনাদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা মেলবোর্নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিকে দিয়ে মনোমুগ্ধকর আমেজ।
নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিতে আতশবাঁজির ঝলকানির মধ্যে সোল থ্রি মায়ো (নিউজিল্যান্ডের গায়ক ত্রয়ী), জিনি ব্ল্যাকমোর, হেইলে ওয়েস্টেনের মতো তারকা শিল্পীদের পরিবেশনা। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডের ৩ প্রজন্মের তিন তারকা স্যার রিচার্ড হ্যাডলি, স্টিফেন ফ্লেমিং ও ব্র্যান্ডন ম্যাককুলামের উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে দিয়েছে বারতি মাত্রা।
বহস্পতিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা ওঠেছে এবারের বিশ্বকাপ আসরের। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে ব্যাট-বলের লড়াই। প্রথম দিনের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা এবং স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। আসরের পর্দা নামবে আগামী ২৯ মার্চ। মেলবোর্নে ফাইনাল। সেই ফাইনালে শিরোপা হাতে উৎসব করবে কারা, তাই এখন মূল দেখার বিষয়।
রিয়াজ/প্রবাসনিউজ