পোশাক খাতে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলবে ভিয়েতনাম

আলোচিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি- ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) সম্পন্ন হলে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনাম এগিয়ে যাবে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গতকাল সোমবার এ সংবাদ প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়ান ডাইজেস্ট।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিপিপি সম্পন্ন হলে ভিয়েতনামের তৈরি পোশাক খাত উপকৃত হবে, যা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতি হতে পারে।

টিপিপি আওতায় থাকা ১২টি দেশ হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ব্রুনেই, চিলি, পেরু, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুর। আলোচিত এ চুক্তি গত দুই বছরের ব্যর্থ চেষ্টার পর চলতি বছরের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গবেষক রাধিকা কাক বলেন, টিপিপি মধ্য আমেরিকার পোশাক নির্মাতাদের জন্য নেতিবাচক হতে পারে। বিষয়টি এরই মধ্যে ‘ত্রিমুখী পরিবর্তন’ বিধির আওতায়  উত্তর আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য (নাফটা) ও ডমিনিকান রিপাবলিক, মধ্য আমেরিকা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত বাণিজ্যের (কাপ্টা-ডিআর) কাছে দাখিল করা হয়েছে।

তবে তৈরি পোশাক খাতের মুক্ত বাণিজ্য নিয়ে যক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনামের আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে ইতিবাচক। তা ছাড়া আওতাভুক্ত দেশগুলোর তৈরি পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে টিপিপিতে শর্তারোপ থাকবে।

টিপিপির তৈরি পোশাকশিল্প সংশ্লিষ্ট শর্তে ভিয়েতনাম উল্লেখযোগ্য নমনীয়তা দেখিয়েছে। টিপিপির আওতাবহির্ভূত দেশের চেয়ে পোশাক তৈরিতে দাম কম রাখার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। শুধু টিপিপি আওতাভুক্ত দেশগুলোতেই ভিয়েতনামের তৈরি পোশাক রপ্তানি করা হবে।

টিপিপির ফলে ভিয়েতনামের বস্ত্র খাত এখনই তেমন সফলতা না পেলেও ধীরে ধীরে অনেক উপকৃত হবে বলে মনে করেন রাধিকা।

টিপিপি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভবনায় এরই মধ্যে ভিয়েতনামে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করেছে।

বিশ্বে ভিয়েতনামের পোশাকের বাজার শিগগিরই ৪ শতাংশ থেকে উন্নীত হয়ে ১১ শতাংশে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হবে ভিয়েতেনাম। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে চীন।

টিপিপির নমনীয় প্রস্তাব জাপান ও কোরিয়ার জন্য কিছুটা ইতিবাচক হবে। তবে এ খাতের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে চীন ও হংকংয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

টিপিপির কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভারত, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে সে তুলনায় বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা এগিয়ে থাকবে বলে মনে করেন রাধিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.