জুবায়ের হত্যা মামলা: ৫ ছাত্রলীগকর্মীর ফাঁসি, ৬ জনের যাবজ্জীবন

ঢাকা: বহুল আলোচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র জুবায়ের হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে অভিযোগ নিঃসন্দেহে প্রমাণিত না হওয়ায় দুই জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী।

রোববার এ রায় ঘোষণা করেন আদালত।

এ মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক, মো. রাশেদুল ইসলাম রাজু, খান মো. রইছ, জাহিদ হাসান, ইসতিয়াক মেহবুব অরূপ, মাহবুব আকরাম, নাজমুস সাকিব তপু, মাজহারুল ইসলাম, কামরুজ্জামান সোহাগ, মো. নাজমুল হুসেইন প্লাবন, শফিউল আলম সেতু, অভিনন্দন কুণ্ডু অভি ও মো. মাহমুদুল হাসান মাসুদ।

আসামিদের মধ্যে মাহবুব আকরাম ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি ও নাজমুস সাকিব ওরফে তপু ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক (কাঠগড়া থেকে পলাতক ২৩/২/১৩), মো. রাশেদুল ইসলাম রাজু (পলাতক), খান মো. রইছ ওরফে সোহান, (কাঠগড়া থেকে পলাতক ২৩/২/১৩), জাহিদ হাসান (পলাতক), মাহবুব আকরাম (কাঠগড়া থেকে পলাতক ২৩/২/১৩)।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ (কাঠগড়া থেকে পলাতক, ২৩/২/১৩), নাজমুস সাকিব তপু (জেলহাজতে), মাজহারুল ইসলাম (জেলহাজতে), ৯), কামরুজ্জামান সোহাগ (জেলহাজতে), শফিউল আলম সেতু (জেলহাজতে), অভিনন্দন কুণ্ডু অভি (জেলহাজতে)। একই সঙ্গে এদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

কোনো অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মো. নাজমুল হোসেন প্লাবন ও মো. মাহমুদল হাসান মাসুদকে বেকসুর খালাস দেন করেছেন বিচারক।

দীর্ঘ তিন বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র জুবায়ের হত্যা মামলার রায় দেয়া হলো।

এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি বহুল আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন হরতালের কারণে আসামিদের আদালতে হাজির করতে না পারায় রায় হয়নি। বিচারক রায়ের জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

গত ২৮ জানুয়ারি এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন বিচারক। ওইদিন আদালতে হাজির হওয়া ছয় আসামির জামিন বাতিল করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এছাড়া সাত আসামি পলাতক রয়েছেন।

গত ২২ জানুয়ারি আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।

এ মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সাক্ষ্যদাতাদের মধ্যে জুবায়েরের ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকালীন প্রাণরসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম বদিয়ার রহমান, প্রভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন ও পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক বর্তমান পিপলস ইউনির্ভাসিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আরজু মিঞা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কবিরুল বাসার ও সাবেক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শহিদুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *