সুদ দেওয়া নেওয়া জঘন্যতম অপরাধ

মাওলানা আশরাফ আলী

সুদ ইসলামে চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ। শরিয়তের পরিভাষায় সুদ নেওয়া দেওয়া কবিরা গুনাহ। সুদ যেহেতু শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয় সেহেতু সুদ দেওয়া নেওয়ার বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে কঠোর হুঁশিয়ার করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে সূরা বাকারার ২৭৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘যাহারা সুদ খায় তাহারা সেই ব্যক্তির ন্যায় দাঁড়াইবে যাহাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। ইহা এই জন্য যে তাহারা বলে, ক্রয় বিক্রয় তো সুদের মতো।’ অথচ আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন। সূদকে জঘন্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে। এটিকে শিরকের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সুদের গুনাহ সত্তরের চেয়েও অধিক আর শিরিক তার সমান (মুসনাদে বাযযার, ইবনে মাজাহ)। আরেক হাদিসে সুদের জঘন্যতা চিহ্নিত করা হয়েছে এভাবে, রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সুদের মধ্যে তেহাত্তর প্রকারের পাপ রয়েছে, এর সবচেয়ে নিম্ন পর্যায়ের পাপ হলো স্বীয় মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া’ (মুসতাদরাকে হাকিম)। উপরোক্ত দুটি হাদিসে সুদ যে কত পাপের কাজ সেটি চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পাপের কাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা। সুদকে এর সঙ্গে তুলনা করে আল্লাহর কাছে এটি যে কতটা অগ্রহণযোগ্য তা চিহ্নিত করা হয়েছে। মায়ের সঙ্গে জেনা জঘন্য অপরাধের একটি। সুদ দেওয়া নেওয়াকে তার সঙ্গে তুলনা করে এই গর্হিত কাজ থেকে মুমিনদের দূরে থাকার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

সুদের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে হাদিসে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘যখন কোনো এলাকায় সুদ ও জেনা ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়, তখন ওই এলাকার অধিবাসীরা আল্লাহর আজাব নিজের ওপর টেনে নিয়ে আসে।’ (আল মুসতাদরাক) বর্তমানে দুনিয়াতে সুদের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে এবং তা সব কিছুকে গ্রাস করতে চলেছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের পূর্বে এমন একটি সময় আসবে, কোনো ব্যক্তিই সুদ খাওয়া থেকে বেঁচে থাকবে না। আর কেউ সুদ ভক্ষণ থেকে বাদ থাকলেও এর ধূলিকণা তাকে স্পর্শ করবেই (সুনানে আবু দাউদ)।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

১৪ thoughts on “সুদ দেওয়া নেওয়া জঘন্যতম অপরাধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *