বিএনপির অবরোধ ও সহিংসতা এবং সরকারের দমন-পীড়ন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ । এ অবস্থায় সেনাবাহিনী একদিন না একদিন হস্তক্ষেপে বাধ্য হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে লন্ডনের বিখ্যাত দ্যা ইকোনমিস্ট পত্রিকা। আজ প্রকাশিত প্রিন্ট ভার্সনে ‘শোডাউন ইন বাংলাদেশ অন ফায়ার’ শিরোনামে প্রতিবেদনে পত্রিকাটি এসব মন্তব্য করেছে। পত্রিকাটির অনলাইন ভার্সনে গতকাল এ প্রতিবেদনটি দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনটির অনুবাদ এখানে তুলে ধরা হলো :
“৪৫ বছর বয়সী অমূল্য চন্দ্র বর্মন। পেশায় রিকশাচালক। গত মাসে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে নিজের গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বাসে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু, এখন তার ঠাঁই হয়েছে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। তিনি যে বাসে উঠেছিলেন, তাতে ছুড়ে মারা হয় পেট্রোল বোমা। তার কোলের ওপর থাকা ব্যাগে গিয়ে পড়ে বোমাটি। বোমায় তার মুখ ও হাত জ্বলে যায়। ব্যাগে ছিল এক মাসের জমানো টাকা। সব পরিণত হয় ছাইয়ে। তবে সান্ত¡না একটাই অন্তত অমূল্য বেঁচে আছেন। এ সপ্তাহে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে একটি বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি)
ডাকা এক মাসব্যাপী চলা অবরোধে প্রায় ৬০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যিনি দুই মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন, তাকে ঢাকার দলীয় কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছে। এদিকে সড়ক, রেলপথ ও পানিপথে অবরোধ দেশকে অচল করে দিয়েছে। অবরোধে অচলাবস্থার ওপর দেশব্যাপী হরতালও পালন করেছে বিএনপি। গত ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে এ অস্থিরতার সূত্রপাত। বিক্ষোভ আন্দোলন শুরুর পর থেকে বিরোধী দলের ১০ হাজারেরও বেশি কর্মীকে আটক করা হয়েছে। বিএনপির অধিকাংশ নেতা জেলে, নির্বাসনে বা পলাতক রয়েছেন। এ সপ্তাহে সরকার সাময়িকভাবে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। অবরোধ প্রত্যাহারে বাধ্য করাতে এ চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল বলে অনুমেয়। কিন্তু, খালেদা জিয়া এর শেষ দেখার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলেই মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ অকার্যকর দুই দলীয় ব্যবস্থায় ভুগছে, যেখানে দুই নেত্রী যাদের ‘ব্যাটলিং বেগমস’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, তারা দেশের মূল্যে নিজেদের বংশানুক্রমিক প্রতিহিংসায় লিপ্ত। ২০০৯ সালের শুরু থেকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। দলটি অধিকাংশ ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে এবং বিএনপির জন্য ক্ষমতায় যাওয়া অসম্ভব করে তুলেছে। সেটা করতে আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপ ঘটিয়েছে, যাদের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন সম্পন্ন হতো। দলটি বিএনপির নেতাদের হয়রানি করেছে ও প্রধান বিরোধী দলের জোটভুক্ত সর্ববৃহৎ দল জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এখন সরকার দাবি করছে, বিএনপির অগ্নিসংযোগ, ধ্বংস ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। বিরোধী দলের অভিযোগ, সরকার একদলীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় লিপ্ত। উভয় দলেরই যুক্তি রয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, খালেদা জিয়া এখন দেশকে এমন এক অবস্থায় দাঁড় করাতে চান, যেখানে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপে বাধ্য হয়। এটা তারা নাও করতে চাইতে পারে। তারা তাদের সুনাম এবং জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী মিশনে লোভনীয় চাকরির ব্যাপারে সজাগ। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো যদি তাদের কর্মকা-ে ক্ষুব্ধ হয় তবে জাতিসংঘে তাদের চাকরির ব্যাপারে সঙ্কট তৈরি হতে পারে। ২০০৭ সালে জেনারেলদের সমর্থনে দু’বছরের জন্য টেকনোক্রেট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে পরে রাজনীতি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
বিএনপির সড়ক অবরোধ ও সহিংসতা এবং সরকারের দমন-পীড়ন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী আজ হোক কাল হোক হস্তক্ষেপে বাধ্য হতে পারে। সরকার মানতে চাইছে না যে, তারা কোন রাজনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলা করছে। বরং, এটাকে আইন-শৃঙ্খলাজনিত সাধারণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করছে তারা। নির্বাচনের ডাক দিতে তারা একেবারেই চাইবে না। রাজনীতি ভেঙে পড়েছে। অমূল্য চন্দ্র বলছিলেন, আমাদের মতো গরীবরা কোন রাজনৈতিক দলের নয়। তা সত্ত্বেও, আমরা দুই দলের সহিংসতার ভয়াবহ শিকার।”
কে এম হোসাইন শরীফ liked this on Facebook.
Nurul Absar Shohel liked this on Facebook.
Shah Murshad liked this on Facebook.
Manikmiah Manik liked this on Facebook.
Mintu Aminul liked this on Facebook.
Sarowar Islam liked this on Facebook.
Jone Make liked this on Facebook.
Rashed Jamal liked this on Facebook.
Elias Ali Prodhania liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Allom Hossen liked this on Facebook.
Sirajul Huque liked this on Facebook.
Ali Imran Shamim liked this on Facebook.
কে এম হোসাইন শরীফ liked this on Facebook.
Nurul Absar Shohel liked this on Facebook.
Shah Murshad liked this on Facebook.
মানিক মিয়া liked this on Facebook.
Mintu Aminul liked this on Facebook.
Sarowar Islam liked this on Facebook.
Jone Make liked this on Facebook.
Rashed Jamal liked this on Facebook.
Elias Ali Prodhania liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Allom Hossen liked this on Facebook.
Sirajul Huque liked this on Facebook.
Ali Imran Shamim liked this on Facebook.