১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত হয়েছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ তথা পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোতে যখন মুসলিম সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিজাবের বিরোধিতা, ঠিক তখনই নিউইয়র্ক থেকে হিজাবের পক্ষে বিশ্ব হিজাব দিবস পালনের ঘোষণা আসে। ২০১২ সাল থেকে ১ ফেব্রুয়রি ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ হিসেবে পালনের পরিকল্পনা করেন নিউইয়র্কের বাসিন্দা নাজমা খান। তার নিজস্ব চিন্তা ও পরিকল্পনার ফল এ দিবস। বিগত তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি। ধর্মের প্রতি মানুষের পারস্পরিক সহনশীলতা, শ্রদ্ধা ও বোরকা পরিধান বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ পরিকল্পনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। হিজাবের ব্যাপারে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠাই এর উদ্দেশ্য। ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের ১১৬টি দেশের লাখ লাখ মুসলিম-অমুসলিম নারী ইসলামের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হিজাব পরে রাস্তায় মার্চ করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে ধর্মীয় পোশাক হিসেবে ব্যবহৃত ইহুদিদের প্রার্থনার টুপি, খ্রিস্টান নানদের লম্বা গাউন আর হেড স্কার্ফ, শিখদের মাথার পাগড়ি- এমনকি বৌদ্ধ সন্ন্যাসিদের গেরুয়া বসন পরিধান নিষিদ্ধ না হলেও ঢাকঢোল পিটিয়ে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে মুসলিম নারীদের আবশ্যক পরিধেয় বস্ত্র হিজাব। সুতরাং একথা স্পষ্ট যে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘুরেফিরে উদ্দেশ্য হলো, সারা পৃথিবীতে ইসলামকে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে তুলে ধরে ইসলামের বিপক্ষে জনমত তৈরি করা, তারপর মুসলিমদের তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী জীবনাদর্শ গ্রহণে বাধ্য করা। এসব বিরোধিতার প্রতিবাদস্বরূপ সত্যের দরজা উন্মোচন করল বিশ্ব হিজাব দিবস। মুসলিম নারীদের হিজাব তথা পর্দা ফরজ। যা কোরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত।
হিজাব শব্দটি আরবি। বাংলা হলো পর্দা। আভিধানিক অর্থ আবরণ, আচ্ছাদন, অন্তরাল বা ঢেকে রাখা। ইসলামী পরিভাষায় প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আচ্ছাদিত করা পর্দা বা হিজাবের অন্তর্ভুক্ত। সাধারণ অর্থে পর্দা বলতে বেগানা পুরুষ বা বেগানা নারী থেকে নিজের মনমানসিকতা, চোখ, কান, জবানকে হেফাজত করে যৌন জীবনকে পবিত্র রাখা বোঝায়। ইসলামী অনুশাসনে প্রত্যেক নারী-পুরুষ সবার জন্য পর্দা করা ফরজ। কেননা পর্দা অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার পথ বন্ধ করে সমাজকে কলুষমুক্ত রাখে। পর্দা ব্যভিচারের পথ বন্ধ করে দেয়। পক্ষান্তরে সমাজে পর্দা প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে ব্যভিচার পথ খুলে যায়। অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা ব্যভিচারের ধারে-কাছেও যেও না। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে নবী! মোমিন পুরুষদের বলে দিন, তারা যেন নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে চলে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটা তাদের জন্য উত্তম, যা তারা করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে পুরোপুরি অবহিত। (সূরা নূর : ৩০)। অন্য আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, আর হে নবী! মোমিন স্ত্রীলোকদের বলুন, তারা যেন নিজেদের চোখকে নিম্নগামী রাখে, নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে ও নিজেদের সাজসজ্জা না দেখায়; কেবল সেসব জিনিস ছাড়া যা আপনা থেকে প্রকাশিত হয়ে পড়ে এবং নিজেদের বুকের ওপর ওড়নার অাঁচল ফেলে রাখে। (সূরা নূর : ৩১)। সূরা আরাফের ২৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাজিল করেছি যেন তোমাদের দেহের লজ্জাস্থান ঢাকতে পার। এটা তোমাদের জন্য দেহের আচ্ছাদন ও শোভাবর্ধনের উপায়, সর্বোত্তম পোশাক হলো তাকওয়ার পোশাক। পর্দায় থাকার সুবিধা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে নবী! আপনার স্ত্রীরা, কন্যা এবং মোমিন মহিলাদের বলে দিন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়, এতে তাদের চিনতে পারা যায়। ফলে তাদের সহজে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা আহজাব : ৫৯)।
Kamrul Hossain liked this on Facebook.
Md Azizul liked this on Facebook.
Mdbelal Hossain liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Ali Imran Shamim liked this on Facebook.
Kamrul Hossain liked this on Facebook.
Md Azizul liked this on Facebook.
Mdbelal Hossain liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Ali Imran Shamim liked this on Facebook.