দরজা বন্ধ করে কনস্টেবলকে পেটালেন এএসপি মিজানুর

গাজীপুরের পুলিশ লাইনে দরজা বন্ধ করে এক পুলিশ কনস্টেবলকে পিটিয়ে আহত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ইনসার্ভিস) মিজানুর রহমান। পরে তাকে অন্য পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

বুধবার বিকেল ৫টার দিকে গাজীপুর পুলিশ লাইনে এ ঘটনা ঘটে।

আহত কনস্টেবলেন নাম রেজওয়ান কবির। তিনি দুই বছর ধরে গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের রিসিভ অ্যান্ড ডেসপাস শাখায় দায়িত্বপালন করে আসছেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বিরল গ্রামে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত কনস্টেবল রেজওয়ান কবির জানান, বুধবার বিকাল ৫টার দিকে গাজীপুর পুলিশ লাইনের ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান স্যার অফিসে এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তার তার নামে কোনো চিঠি রিসিভ করেছি কিনা?

আসেনি জানালে তিনি আামকে ধমক দিয়ে বলেন, আমার চিঠি এসেছে তুই লুকিয়ে রেখেসিস। এ কথা বলে তিনি আমাকে সহকারি পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম স্যারের কক্ষে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করতে বলেন।

আমি দরজাটি চাপালে এসপি স্যার ও অ্যাডিশনাল এসপি স্যারের নামে কি কি চিঠি এসেছে তা দেখাতে বলেন। এ সময় স্যার বলেন, আমি প্রমোশন পেয়ে এসপি ডিআইজি হবো। তুই যেখানেই থাকিস তোর চাকরি খেয়ে ফেলব। এ কথা বলেই মুখে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি, অণ্ডকোষে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাথি মারতে থাকেন।

এ সময় ওই কক্ষে আর কেউ ছিল না। আমার কান্না ও চিৎকার শুনে স্যারের বডিগার্ড রুমে ঢুকলেও আমাকে রক্ষা করেননি। পরে স্যার কক্ষ থেকে বের হয়ে গেলে পার্শ্ববর্তী কক্ষ থেকে সহকর্মীরা এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে গাজীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। আমাকে মারধরের পর কুরিয়ার সার্ভিসের লোক স্যারের চিঠি নিয়ে আসে। এ সময় স্যার চিঠিটি নিয়ে কক্ষ ত্যাগ করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যারা বলেছে তা ডাহা মিথ্যা বলেছে।’

এ বিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, রাত সাড়ে আটটার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানকে ঢাকায় পুলিশ হেড কোয়ার্টারে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোলায়মানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে এএসপি মিজানুর রহমান কনস্টেবল রেজওয়ানকে পিটিয়ে আহত করেছেন এ ঘটনা জানাজানি হলে জেলায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবলদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *