চোরাগোপ্তা হামলা বন্ধ করতে ঢাকা মহানগরে বিএনপি-জামায়াতের সক্রিয় ১০০ নেতা-কর্মীকে চিহ্নিত করে তালিকা করেছে পুলিশ। তালিকায় এই নেতা-কর্মীদের বোমাবাজ, অর্থ জোগানদাতা ও সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এঁদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই ধরনের একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এই তালিকায় রাজধানীর ২৯টি এলাকার ১ হাজার ৪৬ জন বিএনপি-জামায়াত নেতার নাম রয়েছে। তবে এঁদের ১০০ জনকে বোমাবাজ ও সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) ইতিমধ্যে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত এক মাস ঢাকায় মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই শেষে গত ২৫ জানুয়ারি এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তালিকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যাঁদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁদের অবশ্যই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। মূলত যাঁরা চোরাগোপ্তা হামলার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের খুঁজে বের করতেই এ তালিকা করা হয়েছে।
একই বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এই তালিকা করা হয়েছে। এখন অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মূলত এই তালিকা করতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলন দমনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি গত প্রায় এক মাসের নাশকতার ধরন ও ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণকারী বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। দেখা গেছে, ঢাকার আন্দোলনে তেজগাঁও কলেজ, তিতুমীর কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বেশি জড়িত। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ এবং পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা বেশি হয়।
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তিতুমীর কলেজকেন্দ্রিক ছাত্রদলের চারজন ও তেজগাঁও কলেজের দুজন ‘নিখোঁজ’ হন। এরপর থেকে ফার্মগেট, বাড্ডা, মহাখালী এলাকায় গাড়ি পোড়ানো ও ককটেল বিস্ফোরণ অনেক কমে যায়। ওই সময় আন্দোলন চলাকালে এক মাসের মধ্যে ছাত্রদলের ২৪ জন নেতা-কর্মী ‘নিখোঁজ’ হন। অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এঁদের গ্রেপ্তার বা আটকের কথা স্বীকার করেনি। পুলিশ মনে করছে, তালিকায় এবার যাঁদের নাম এসেছে, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হলে ঢাকায় চোরাগোপ্তা হামলা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তালিকায় বোমাবাজ হিসেবে তিতুমীর কলেজের বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাদের নাম উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া অর্থ বিনিয়োগকারী, জোগানদাতা ও মদদদাতা হিসেবে ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির সাবেক কাউন্সিলরদের নাম উল্লেখ রয়েছে। তালিকায় নাম আসা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সবাইকে পাওয়া যায়নি। কয়েকটি মাধ্যমে চেষ্টা করে তিনজন সাবেক কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা হয়। একজন বলেন, তাঁরা আন্দোলন করছেন। নাশকতার সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই। পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁদের হয়রানি করছে। বনানীর বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, পেট্রলবোমা হামলা বা মানুষ মারার রাজনীতি তাঁরা করেন না।
সন্ত্রাসী ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী হিসেবে তিতুমীর কলেজ ছাত্রশিবিরের নেতাসহ বনানী বিএনপির ৩৮ জন কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র বহনকারী হিসেবে তিতুমীর কলেজ শাখা শিবিরের নেতা-কর্মী এবং বনানীর বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর নাম তালিকায় আছে।
নাশকতা কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বদানকারী রমনা থানা বিএনপির একজন নেতা, জামায়াতের অর্থ জোগানদাতা হিসেবে পুরানা পল্টনের একজন নেতা ছাড়াও পেশাদার সন্ত্রাসীদের নাম আছে। টাকার বিনিময়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন—এমন কিছু নামও তালিকায় আছে।
তালিকায় রফিকুল ইসলাম মিয়া, শাহজাহান, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিব উন নবী খান, সেলিমা রহমানসহ বিএনপির অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাকে পিকেটার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কয়েক দিন থেকে রাজধানীতে যৌথ অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে দলের মহানগর কমিটি পুনর্গঠনের সঙ্গে জড়িত দুই নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মোয়াজ্জেম হোসেনকে (আলাল) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোয়াজ্জেম হোসেন সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। এ ছাড়া মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের সক্রিয় নেতাদের তালিকা তৈরি করে গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে তুরাগ থানা বিএনপির সভাপতি আতিকুর রহমানসহ তিনজনকে। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস, সদস্যসচিব হাবিব উন নবী খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ আরও কয়েকজনের বাসায় কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়। মহানগর নেতাদের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনের নেতাদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চালানো হচ্ছে।
সুত্র-প্রথমআলো
Jone Make liked this on Facebook.
Raz Chowdhury liked this on Facebook.
Noorul Islam liked this on Facebook.
Imran Hossan Shohag liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
মুজিব মঞ্জু liked this on Facebook.
Mubarak Hussain liked this on Facebook.
Ali Imran Shamim liked this on Facebook.
Jcd Azad liked this on Facebook.
Mostafizur Rahman Shovo liked this on Facebook.
Jone Make liked this on Facebook.
Raz Chowdhury liked this on Facebook.
Noorul Islam liked this on Facebook.
Imran Hossan Shohag liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Мцјіь Моијц liked this on Facebook.
Mubarak Hussain liked this on Facebook.
Ali Imran Shamim liked this on Facebook.
Azad Bhuiyan liked this on Facebook.
মোস্তাফিজুর রহমান শুভ liked this on Facebook.