মুমিনদের মর্যাদা ও তাদের বৈশিষ্ট্য

মুফতি আবু হোরায়রা রায়পুরী

হজরত নাফে (রহ.) বলেন, একদিন হজরত ইবনে ওমর (রা.) কাবাগৃহের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর ঘর! তুমি কত বড় এবং তোমার সম্মান কত বেশি। কিন্তু একজন মুমিন ব্যক্তির মর্যাদা আল্লাহতায়ালার কাছে তোমার চেয়েও অনেক বেশি। (তিরমিজি শরিফ)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তির জন্য আসমানে দুটি দরজা আছে। একটি দিয়ে তার নেক আমল আসমানে উঠে। আর অপরটি দিয়ে আসমান থেকে তার রিজিক নাজিল হয়। যখন সে ইন্তেকাল করে, তখন দুটি দরজাই তার জন্য ক্রন্দন করে। মুমিনদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা সূরা মুমিনুনে ইরশাদ করেন। ১. মুমিনরা সফলকাম হয়ে গেছে ২. যারা নিজেদের নামাজে বিনয়-নম্র ৩. যারা অনর্থক কথাবার্তায় নির্লিপ্ত ৪. যারা জাকাত দান করে থাকে ৫. যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে ৬. তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না ৭. অতঃপর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমা লঙ্ঘনকারী হবে ৮. এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুঁশিয়ার থাকে ৯. যারা তাদের নামাজসমূহের খবর রাখে ১০. তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে ১১. তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানের উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে চিরকাল থাকবে। উল্লিখিত আয়াতগুলো নাজিল হওয়ার পর মহানবী (সা.) কেবলামুখী হয়ে বসে গেলেন এবং নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতে লাগলেন : ‘হে আল্লাহ আমাদের বেশি দাও- কম দিও না। আমাদের সম্মান বৃদ্ধি কর- লাঞ্ছিত কর না। আমাদের দান কর- বঞ্চিত কর না। আমাদের অন্যের ওপর অধিকার দাও- অন্যদের অগ্রাধিকার দিও না এবং আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাক এবং আমাদের তোমার সন্তুষ্টিতে সন্তুষ্ট কর।’ অতঃপর মহানবী (সা.) বলেন, কেউ যদি এ আয়াতগুলো পুরোপুরি পালন করে, তবে সে সোজা জান্নাতে চলে যাবে। সুতরাং চিন্তা করলে দেখা যায়, উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে যাবতীয় প্রকার আল্লাহর হক ও বান্দার হক এবং এতদসংশ্লিষ্ট সব বিধিবিধান প্রবিষ্ট হয়ে গেছে। যে ব্যক্তি এসব গুণে গুণান্বিত হয়ে যায় এবং এতে অটল থাকে, সে কামেল মুমিন এবং ইহকাল ও পরকালের সাফল্যের হকদার!

লেখক : ইস্পাহানী দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা, আগানগর, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *