ঢাকা : খালেদার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো তার প্রবাসী জীবনে মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই ভিবিন্ন সময়ে ফোনে কথা বলতেন। মা ছেলে দুজনের দুজনকে প্রায় ফোন করতেন। ফোনালাপে খালেদার খোঁজ নিতেন পুত্রবধু সৈয়দ শরমিলা রহমান সিঁথির, এবং দুই নাতনি জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানের সঙ্গে। সকলের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেন খালেদা জিয়ার ফোন করেই প্রথমেই ছেলের খবর নিতেন তার দুই নাতনি এবং খোঁজ নিতেন পুত্রবধু সৈয়দ শরমিলা রহমান সিঁথির, এটিই ছিলো খালেদার নিয়মিত রুটিনেরই অংশ।
এইতে সেই দিন শুক্রবার মধ্যরাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেছিলেন কোকো। গুলশানের কার্যালয়ে অবস্থানরত দলীয় সূত্রে যানা যায় মা-ছেলের সর্বশেষ ফোনাআলাপের কথা।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার পাশাপাশি দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন আরাফাত রহমান কোকো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছা এমন একজন এ তথ্য জানিয়েছেন, যে গত ৫ জানুয়ারি পুলিশের ছোড়া পেপার স্প্রে’র কারণে অসুস্থ হওয়ার পর প্রতিদিনই খালেদা জিয়ার খোঁজ নিয়েছেন আরাফাত রহমান কোকো। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রায় সব সময় উদ্বিগ্ন ছিলেন কোকো। আর মা হয়ে গর্বে সাথে ছেলে কোকোর উদ্বেগের বিষয়টি ঘনিষ্টদের জানিয়েছিলেন তিনি নিজেই। যে তার ছোট ছেলেটি সব সময় তার নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে চিন্তা করে থাকেন। এমন কি ঠিক মতো খাবারের ব্যাপারেও খবর নিতেন আর বলতেন মা তুমি ঠিক মতো ঔষধ খাবে নিজের শরিরের প্রতি খেয়াল রাখবে।
দলীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোকোর শেষ ফোনালাপ হয়েছিলো। আর সেই ফোনাআলাপে কোকো বলেন – মা ভালো থেকো, নিরাপদে থেকো, আমাদের জন্য চিন্তা করোনা আমার আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। এর কিছুদিন আগে কোকো বিদেশ থেকে মাকে দেখার জন্য দেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলো।
উল্লেখ্য, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বাংলাদেশ সময় শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তার মৃত্যু হয় বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল জানান।
তিনি জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হলে আরাফাত রহমান কোকোকে মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি। তার দাফন ও জানাজার বিষয়ে পারিবারিক সিদ্ধান্তের পর সবাইকে জানানো হবে বলে জানান তিনি।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেনানিবাসের বাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে গ্রেফতার হন কোকো। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরদিন চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান কোকো।
থাইল্যান্ড যাওয়ার পর মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় সেখান থেকে মালয়েশিয়ায় চলে যান তিনি। এরপর থেকে তিনি মালয়েশিয়াতেই অবস্থান করছিলেন