আমরা আমেরিকানদের মত ছোট ছোট প্যান্টস পরিধান করে ঘুরতে পারি। আমরা আমেরিকানদের মত পাছা ছেড়া জিনস পরিধান করে ঘুরতে পারি। আমরা আমেরিকানদের মত খাবার খেতে পারি। কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন খেতে পারি। ম্যাকডোনাল্ডস খেতে পারি। আমেরিকাতে যাবার জন্য পাগল হয়ে যেতে পারি। আমেরিকানদের মত গান গাইতে চেস্টা করতে পারি। আমেরিকানদের সব বিষয় অনুকরণ করতে পারি ও অনুকরণ করে গর্ববোধ করি কিন্তু আমরা আমেরিকানদের মত রাজনীতি করতে পারিনা ??
আমেরিকান ডেমোক্রাটস রা কি রিপাবলিকানদের ক্রশফায়ারে দেয় নাকি?
আমেরিকাতে দুইটা জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল আছেঃ
ডেমোক্রাটিক পার্টি Democratic Party
রিপাবলিকান পার্টি Republican Party
মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের রিপাবলিকান পার্টি যখন ক্ষমতায় থাকে তখন ডেমোক্রাটিক পার্টির সদস্যদের ক্রশফায়ারে হত্যা করতে শুনিনি কোনদিন। বা বাসায় যেয়ে গুলি করে হত্যা করতেও শুনিনি। বা বাসা থেকে উঠিয়ে এনে রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করতেও শুনিনি। অথবা বাসা থেকে উঠীয়ে এনে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিতেও শুনিনি। এ ধরনের ঘটনা ভারতে ঘটেছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে ঘটেছে বলে শোনা যায়নি। কেউ শোনেনি কখনও।
আমরা মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের এত পদলেহন করি। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের রাষ্ট্রদূত যদি তার পশ্চাৎ দিয়া গ্যাস নির্গত করে তাহলে সাথে সাথে ফেসবুকের দেওয়ালে দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে সেই শব্দ সাড়া বাংলাদেশের পাবলিক শুনে । মার্কিন যুক্তরাস্ট্র গ্রীন সিগন্যাল দিলেই তখন আমাদের দেশে্র নেত্রীরা আন্দোলনের ডাক দেন। এই গ্রীন সিগন্যালের সাথে যদি সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতো তাইলে কতই না আমোদ হইত।
মার্কিন যুক্তরাস্ট্র অন্যদেশে বোমা ফেলে মানুষ হত্যা করে। অন্যদেশে যেয়ে ধর্ষন করে। অন্যদেশে যেয়ে লুট করে। নিজের দেশে নিজের ভাইয়ের বুকে গুলি চালায়না। নিজের দেশে নিজের ভাইয়ের বাসায় যেয়ে লুট করেনা। নিজের দেশে নিজের মাবোনকে ধর্ষন করেনা।
অথচ অন্যদেশ থেকে আমরা সৈন্য ডেকে আনি আমাদের হত্যা করার জন্য। বাংলাদেশের মানুষ যারা বাংলাদেশী হত্যা করে তাদের সাহস হবে কোন মার্কিন নাগরিককে হত্যা করতে? তাদের সাহস হবে কোন ভারতীয় নাগরিককে হত্যা করতে? তাদের সাহস হবে শ্বেত চামড়ার কারুকে হত্যা করতে ??
খিলগাঁওয়ের নুরুজ্জামান জনিকে ক্রসফায়ারে দেওয়া কোন ব্যাপার না। সাহস হবে ডঃ কামাল হোসেনের জামাইকে ক্রশ ফায়ারে দিতে ?
কারাগারে ছোট ভাইকে দেখতে গিয়েছিলেন খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জনি (৩০)। কারা ফটক থেকে পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়া হয়। গতকাল ভোরে তার লাশ পাওয়া যায় খিলগাঁওয়ের জোড়পুকুর পাড়ের বালুর মাঠে।
ইমরুল কায়েস (৩৮) নামের ওই ব্যক্তি নড়াইল পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্থানীয় জামায়াত নেতা। ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইমরুল কায়েস এলএলবি ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য গত ১৪ জানুয়ারি বুধবার ঢাকায় যায়। সেখানে পৌঁছানোর পর ওয়ারির মৈসুন্দী এলাকার একটি বাসা থেকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়। সোমবার ভোর রাত ৩টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ইমরুল।
আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও নতুন মন্ত্রিসভার সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুরের গাড়ি বহরে হামলা এবং পুলিশের গুলিতে আওয়ামী লীগের চার নেতাকর্মী হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর (৩৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পলাশবাড়ি ইউনিয়নের নীলফামারী-ডোমার সড়কের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। রব্বানী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্ত্রাদক ছিলেন। সকালে স্থানীয়রা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সড়কের পাশে একটি লাশ দেখতে পায় ।
এইভাবে এখন প্রতিদিন বিরোধীদলের কেউ না কেউ ক্রশফায়ারের বলি হবে। মানুষ হত্যা বিশেষ করে বিরোধীদলের রাজনৈতিক নেতাকর্মী হত্যা বাংলাদেশে অপরাধ নয়। স্বাভাবিক ব্যাপার। অথচ বাংলাদেশের জনগন আমেরিকানদের মত হতে চায়। সিংগাপুরের মত দেশ বানাতে চায়। সিংগাপুরে তো পথে থুতু ফেললে জরিমানা হয়। সিংগাপুরের ক্ষমতাসীন সরকার বিরোধীদলের সদস্যদের ক্রশফায়ারে হত্যা করেনা। সেদিন বাংলাদেশ থেকে এক বিশাল খুনী বাহিনী জাতিসংঘ থেকে ঘুরে এলো। ক্রশফায়ারে কিভাবে বিরোধীদলের নেতাকর্মী হত্যা করতে হয় সেটা ওরা মার্কিন গোয়ান্দা সংস্থাকে শিখিয়ে আসতে পারতো।
সব চাইতে মজার ব্যাপার হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যতই বাংলাদেশী হত্যা করে ততই বাংলাদেশীরা এই দলকে ভালবাসে। কিছুদিন পর পরই দেখি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হয়। অথবা দল বদল করে একই খুনী যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে সে দলে যোগ দেয় এরা যদি অপরাধী হতো তাহলে তো এরা সবাই জেলে থাকতো বা ফাঁসী হতো – তাইনা ?? অথবা এমনও হতে পারে – বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ আওয়ামীলীগের সমর্থক।
আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলাদেশীদের পাশবিকতার শিকার। সেজন্য আমি বুঝতে পারি বাংলাদেশের অনেক মানুষ পাশবিকতা পছন্দ করে। বিভিন্ন সময়ে আমি ফেসবুকে দেখেছি মানুষের মৃত্যু হলে অনেক মানুষ উল্লাস করে। মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে ভালবাসে। বেশ কিছুদিন কেউ যদি না মরে সবাই কেমন যেন উশকুস করে।