মহাসড়কে পুলিশও বিজিবি প্রহরায় যানবাহন চলাচল শুরু হলেও ‘ত্রিফলা’ নামে এক ধরনের লোহার কাঁটা এখন চালকদের কাছে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লোহার রড দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি ত্রিভূজ আকৃতির এ ত্রিফলা কাঁটা। এর তিনটি দণ্ড সুচালো এবং ধারালো। একটি দণ্ড আড়াই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত করতে এই বিশেষ অস্ত্র ব্যবহার করছে অবরোধকারীরা। মহাসড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয় এ ত্রিফলা। যা চালকদের পক্ষে আগে থেকে দেখা সম্ভব নয়। এটির উপর দিয়ে যেকোনো যানবাহনের চাকা উঠলেই তা ফুটো হয়ে বিকল হয়ে পড়ে। ফলে বাধ্য হয়ে কিছুদুর গিয়ে চালককে গাড়ি থামাতে হয়। আর সুযোগ বুঝে গাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটায় অবরোধকারীরা।
মহাসড়কে সন্ধ্যার পর থেকে চলে এ ত্রিফলার ব্যবহার। ঢাকা-বগুড়া ও ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মাটিডালি, বারপুর, গোকুল, ছিলিমপুর, বনানী ও শাজাহানপুর এলাকায় ত্রিফলার ব্যবহার ঘটছে। বগুড়ার মহাসড়কে অবরোধকারীদের ত্রিফলা ব্যবহারের কারণে এ পর্যন্ত শতাধিক যানবাহনের চাকা ফুটো হয়ে বিকল হয়ে পড়ে। এরমধ্যে ১০ থেকে ১২টিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বগুড়ার চারামাথা এলাকায় অগ্নিসংযোগের শিকার এক ট্রাক চালক জানান, বগুড়ার চারামাথা এলাকায় ট্রাকটির চাকা পাংচারের ঘটনা ঘটে। চাকা বদলানোর সময় মুহূর্তের মধ্যে মুখোশ পরিহিত ৫/৬ জনের একটি দল ট্রাকটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। ত্রিফলা আঘাত থেকে বাদ যায়নি পুলিশের টহল গাড়িও। বিশ্ব ইজতেমর ডিউটি শেষে পুলিশের একটি পিকআপ রংপুর ফিরছিল।
বগুড়ার গোকুলে পুলিশের ওই পিকআপটির চাকায় ত্রিফলা বিদ্ধ হয়। ফলে আটকা পড়ে গাড়িটি। এ সময় অবরোধকারীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। তাদের ইটপাটকেলে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহতদের মধ্যে জোবায়ের নামে পুলিশ সদস্যকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশের আরো দুটি টহলগাড়ি ত্রিফলার আক্রান্তে চাকা পাংচারের ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন শাজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম জানান, শাজাহানপুর থানা এলাকায় এ পর্যন্ত ৪০ থেকে ৫০টির বেশি যানবাহন ক্রিফলা বিদ্ধ হয়ে চাকা পাংচারের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন পাম্পে এসব যানবাহন আশ্রয় নিয়েছে। আর যেসব যানবাহন অতিরিক্ত মালবোঝাই থাকে ওইসব গাড়ি থেমে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। আর সুযোগ বুঝে অবরোধকারীরা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক পিপিএম বলেন, ‘বিষয়টি পুলিশের নজরে এসেছে। রাতে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটাতে এমন কৌশল নিয়েছে অবরোধকারীরা। এ ব্যাপারে পুলিশ সজাগ রয়েছে।