সংলাপে বসার তাগিদ হেফাজতের

বাংলাদেশে চলমান ‘রাজনৈতিক সংকট’ নিরসনে দলগুলোকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।

হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীর প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদের স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, একটি ‘অরাজনৈতিক সংগঠন’ হিসাবে হেফাজতে ইসলাম কোনোভাবেই দেশে দমন-পীড়ন ও জ্বালাও-পোড়াও চায় না, শান্তি চায়।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলো যেহেতু মানুষ ও দেশের স্বার্থে রাজনীতি করছে, তাই তাদের উচিত হানাহানি বন্ধ করে আলোচনায় বসে সংকট সমাধানের পথ খোঁজা।

‘আলোচনায় বসার প্রশ্নে কোনো ধরনের শর্ত আরোপ ও সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। সরকারি ও বিরোধীদলের দ্বন্দ্ব-সংঘাতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশের আলেম সমাজও উদ্বিগ্ন।’

হাটহাজারীর কওমী মাদ্রাসভিত্তিক এ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আমির ছাড়াও মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী এবং নায়েবে আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও নূর হোসাইন কাসেমীসহ শীর্ষ নেতাদের নাম রয়েছে এ বিবৃতিতে।

২০১৩ সালের শুরুতে দশম জাতীয় নির্বাচনের পর এক বছর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে প্রধান দুই দলের পাল্টাপাল্টিতে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়।

গত ৫ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ করতে না পেরে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া সারা দেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দিয়েছেন। এর পর থেকে সহিংসতা ও নাশকতায় এ পর্যন্ত অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

হেফাজতের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে উল্লেখ করে থাকেন যে, তিনি দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নতি চান; মানুষের স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করতে চান এবং বিরোধী দলও বলে থাকে, তারা সংঘাত ভাংচুরের রাজনীতি করে না। সুতরাং দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আলোচনায় বসতে তাদের বাধা থাকার কথা নয়।’

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ হিসাবে উল্লেখ করে হেফাজত বলছে, ‘দেশবাসী আতঙ্কিত। দেশব্যপী সহিংসতা, হানাহানি, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ও আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রব্যমূল্য ধরাছোঁয়ার বাইরে।’

‘খেটে খাওয়া শ্রমিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, শিল্পপতিসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ কর্মহীন ও নিঃস্ব হয়ে খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে নাগরিক জীবনে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’

দেশের ‘বর্তমান সংকট’ নিরসনে আগামী শুক্রবার নফল রোজা পালন ও জুমার পরে মসজিদে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করারও আহ্বান জানানো হয়েছে হেফাজতের বিবৃতিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *