ঢাকা: সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আজ দু’দলই সংবিধান ভঙ্গ করছে, সরকার দেখামাত্র গুলির কথা বলছে, আর বিরোধী দল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করছে।’
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দাও, সহিংসতা বন্ধ কর’ শীর্ষক এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গণফোরাম, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও নাগরিক ঐক্য এ সমাবেশের আয়োজন করে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ আর জনগণের মধ্যে বিরোধ অসাংবিধানিক শাসনের পরিণতি। দেখামাত্র গুলি করার মতো আদেশ দিলে সংবিধান রক্ষা হয় না, সংবিধান লঙ্ঘন হয়।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন- ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সংবিধান রক্ষা করার নির্বাচন। এখন সে কথা তিনি ভুলে গেছেন।’
ড. কামাল বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষই আজ সন্ত্রাস থেকে মুক্তি চায়। তারা কার্যকর গণতন্ত্র দেখতে চায়। তারা দেশে বোমাবাজি চায় না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এ দেশ কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। জনগণকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা দু’দলের হাত থেকে এ দেশকে বাঁচাবো।’
জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘রাজাকার যেমন কোনো দিন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না, আওয়ামী লীগও কোনো দিন গণতন্ত্রী হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসীবাদী, স্বৈরাচারী এ সরকারের বিরুদ্ধে একটি জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।’
সিপিবি সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘দেশ আজ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি বিরাজ করছে। বড় দু’টি দলের এ নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাদের একটাই লক্ষ্য যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়া আর ক্ষমতায় টিকে থাকা। এজন্য তারা দেশের সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করছে।’
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে যেভাবে আটকিয়ে রাখা হয়েছে, বিএনপিকে জনসভা করতে দেয়া হচ্ছে না, তার সমালোচনা করি আমরা। কিন্তু আন্দোলনের নামে বোমাবাজি করে মানুষ হত্যা জনগণ মেনে নিতে পারে না।’
তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যদি আন্দোলন, অবরোধ ও মানুষ হত্যা বন্ধ করতে না পারেন তাহলে ক্ষমতা ছেড়ে দিন।’
বক্তারা বলেন, গণতন্ত্রকে সুনিশ্চিত করতে চাইলে জাতীয় সংলাপের বিকল্প নাই। দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ না করতে পারলে এবং দেশে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে না পারলে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মুহাম্মদ মনসুর আহমেদ প্রমুখ।