ঢাকা : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আমি আশঙ্কা করে বলেছিলাম, দেশে আবারো জ্বালাও-পোড়াও শুরু হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আহবান জানিয়েছিলাম এক টেবিলে বসার। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনলেন না। শেষ পর্যন্ত মনে হয় আলোচনায় বসতেই হবে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলস্থ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমি শান্তির ডাক দিয়েছি। আসুন আমরা এই আন্দোলনকে বেগবান করি। জাতীয় কনভেনশন করি। আলোচনার পথ খুঁজে বের করি।
তিনি বলেন, সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের দায়িত্ব মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া। আমি বলব, সরকার তাতে ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য সরকারকে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে এরশাদ বলেন, ইজতেমার মধ্যেও অবরোধ প্রত্যাহার করলেন না। আপনারা কোন ধরনের মুসলমান? মানুষ পুড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। ক্ষমতায় যেতে হলে মানুষের ভালোবাসা প্রেয়োজন।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কত লাশের প্রয়োজন আপনাদের? ভাগ্য পরিবর্তনের নাম করে পুড়িয়ে মারছেন, এটা কিসের রাজনীতি? আমাদের স্লোগান শান্তির জন্য পরিবর্তন। পরিবর্তন আনতেই হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, ২৪ বছর আগে শান্তির জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আজ আর ঘরে বসে থাকলে হবে না। এর প্রতিবাদ করতে হবে। আপনারা রাস্তায় নেমে আসুন। আজ না হয় কাল পরিবর্তন করতেই হবে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ আওয়ামী লীগ-বিএনপির অপরাজনীতি থেকে মুক্তি চায়। দুই দল মুক্ত বাংলাদেশ চায় তারা। এভাবে বসে থাকলে চলবে না। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এদের ঘৃণা করুন।
তিনি বলেন, জাতি আজ এক মহাদুর্যোগে। এবারের মহাদুর্যোগ মানুষের সৃষ্টি। মানুষের প্রতি মানুষের কোনো সহমর্মিতা নেই। দেশে এখন চলছে বর্বরতা, হিংস্রতা। মানুষের রক্ত নিয়ে হুলিখেলা চলছে।
এরশাদ বলেন, এগুলো যারা করছেন তারা কি মানুষ না? মানুষ মেরে কি ক্ষমতায় আসা যায়? ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কত লাশ দরকার? একটি দল জনগণকে জিম্মি করে রাজনীতি করতে চায়। দেশ ধ্বংস হচ্ছে। কল-কারখানা বন্ধ হচ্ছে। আপনারা বলছেন, জনগণ ক্ষমতার উৎস। আবার আপনারাই তাদের পুড়িয়ে মারছেন। এ কেমন রাজনীতি?
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এতে সভাপতিত্ব করেন।
শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়শল চিশতী, আবুল কাশেম, এম এ হান্নান, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, যুব সংহতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসেইন মৌসুমী, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সদস্য সচিব মোবারক হোসেন আজাদ, মৎসজীবী পার্টির আহবায়ক সোমনাথ দে প্রমুখ। –