চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ও চন্দ্রঘোনায় ওহাবি ও সুন্নি মতাবলম্বীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার মধ্যরাত আড়াইটা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের সময় সরফভাটা এবং গোডাউন এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর এবং কয়েকটি দোকানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া সংঘর্ষে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষ ও উত্তেজনার জেরে শনিবার সকাল থেকে কাপ্তাই সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে একটি পক্ষ। এ ছাড়া রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোরও খবর পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়নের পূর্ব সরফভাটা এলাকায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে এক সুন্নি সম্মেলন ও মাহফিলের আয়োজন করা হয়। গভীর রাতে সেই মাহফিলে তাবলিগ ও ইজতেমা নিয়ে একজন মাওলানা বক্তব্য রাখেন। এই বক্তব্যের পর মাহফিলে হঠাৎ করে উত্তেজনা এবং একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সময় মোহাম্মদ সারেক (২০) নামের এক তরুণ গুরুতর আহত হন। উক্ত মাহফিল থেকে ওহাবিরা সুন্নি আলেমদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে বিভিন্ন স্থানে মাইকে প্রচার হতে শুরু করলে সংঘর্ষ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৩টার দিকে উপজেলার গোডাউন এলাকায় কয়েকটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয় একদল উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি।
এ সময় সরফভাটা গোডাউনসহ কয়েকটি এলাকায় বেশ কিছু দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। একইভাবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান এলাকায় অবস্থিত তৈয়বিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা থেকে ছাত্ররা বেরিয়ে এলে ওহাবি-সুন্নি সংঘর্ষ হয়। এখানেও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ দিকে গভীর রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদর এলাকায় একটি মাদ্রাসায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ছয়-সাতজন আহত হয়েছেন। ভোররাত পর্যন্ত সংঘর্ষ, উত্তেজনা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর শনিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়া অংশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
সকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলী শাহের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ারও খবর পাওয়া গেছে। তবে এই সময় উপজেলা চেয়ারম্যান গাড়িতে ছিলেন না।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) চন্দন চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত এবং পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।