আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এই পর্বে অংশ নিচ্ছেন ৩৪ জেলার মুসল্লিরা।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে বুধবার থেকে মুসল্লিরা অবরোধ ও হরতালের ভীতি মাথায় নিয়ে ইজতেমাস্থলে আসতে শুরু করেছেন।
আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।
দ্বিতীয় পর্বে ৩৪টি জেলার মুসল্লিদের জন্য ৩৯টি খিত্তা নির্ধারণ করা আছে। ইজতেমা ময়দানে জেলা ভিত্তিক খিত্তায় মুসল্লিরা অবস্থান নিতে শুরু করেছেন।
এগুলোর মধ্যে- ১ ও ২ নং খিত্তায় নারায়ণগঞ্জ জেলা, ৩ ও ৪ নং খিত্তায় ঢাকা জেলা, ৫ নং খিত্তায় কক্সবাজার জেলা, ৬ নং খিত্তায় মানিকগঞ্জ জেলা, ৭ নং খিত্তায় পিরোজপুর জেলা, ৮ নং খিত্তায় পটুয়াখালী জেলা, ৯ নং খিত্তায় টাঙ্গাইল জেলা, ১০ নং খিত্তায় জামালপুর জেলা, ১১ নং খিত্তায় বরিশাল জেলা, ১২ নং খিত্তায় নেত্রকোনা জেলা, ১৩ নং খিত্তায় কুমিল্লা জেলা, ১৪ নং খিত্তায় মেহেরপুর জেলা, ১৫ ঝিনাইদহ, ১৬, ১৭ ও ১৮ নং খিত্তায় ময়মনসিংহ জেলা, ১৯ নং খিত্তায় লক্ষ্মীপুর জেলা, ২০ নং খিত্তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, ২১ নং খিত্তায় কুড়িগ্রাম জেলা, ২২ নং খিত্তায় বগুড়া জেলা, ২৩ নং খিত্তায় পঞ্চগড় জেলা, ২৪ নং খিত্তায় চাপাই নবাবগঞ্জ জেলা, ২৫ নং খিত্তায় নীলফামারী জেলা, ২৬ নং খিত্তায় নোয়াখালী জেলা, ২৭ নং খিত্তায় ঠাকুরগাঁও জেলা, ২৮ নং খিত্তায় পাবনা জেলা, ২৯ নং খিত্তায় নওগাঁ জেলা, ৩০ ও ৩১ নং খিত্তায় মুন্সিগঞ্জ জেলা, ৩২ নং খিত্তায় মাদারীপুর জেলা, ৩৩ নং খিত্তায় গোপালগঞ্জ জেলা, ৩৪ নং খিত্তায় সাতক্ষীরা জেলা, ৩৫ নং খিত্তায় মাগুরা জেলা, ৩৬ নং খিত্তায় কুষ্টিয়া জেলা, ৩৭ নং খিত্তায় সুনামগঞ্জ জেলা ও ৩৮ নং খিত্তা খুলনা, ৩৯নং খিত্তা মৌলভীবাজার জেলার জন্য নির্ধারণ করা রয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রথম দফার পর ইজতেমা ময়দান পরিস্কার করে উপযোগি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজতেমার আয়োজক কমিটির মুরুব্বী মো. গিয়াস উদ্দিন।
চাঁদপুর থেকে আগত মুসল্লি আবুল হাসেম জানান, অবরোধ-হরতাল তাদের ইজতেমায় যোগদান ঠেকাতে পারেনি। বুধবার ভোরে রওনা দিয়ে তাদের ৩০ জনের একটি দল ট্রাকযোগে সন্ধ্যায় টঙ্গীতে পৌঁছেছেন। তবে আসার পথে তাদের ভয় ও উৎকণ্ঠা তাড়া করছিল, কখন কি হয়।
এসব হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার করে আল্লাহর রাস্তায় সময় দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
একইভাবে বাস না পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে শীত কুয়াশা উপেক্ষা করে মঙ্গলবার ট্রাক ভাড়া নিয়ে চটের ছামিয়ানা টানিয়ে ১৪ জনের একটি দল নিয়ে ইজতেমায় এসে পৌঁছেছেন আব্দুস সালাম।
তিনি জানান, শীত আর কুয়াশার মধ্যে তাদের আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে। তাদের অনেকেই সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন।
ইজতেমায় মুসল্লিদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম
ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক প্রথম পর্বের নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।
নিরাপত্তায় থাকছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ সহস্রাধিক সদস্য
এবারও ইজতেমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন প্রায় ১২ হাজার পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ পর্বেও পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন ঘটতে না পারে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।
গাজীপুর পুলিশ সুপার (এসপি) জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১২ হাজার সদস্য ইজতেমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন। বৃহস্পতিবার থেকেই আবার পূর্ণদ্যোমে র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা স্ব স্ব দায়িত্ব পালন শুরু করবেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক জানান, জেলা প্রশাসন বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকাণ্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় করছে। ঢাকা বিভাগীয় প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিক নিদের্শনায় ইজতেমার বিভিন্ন কার্যাদি তদারকি করছে।