অনির্দিষ্টকালের অবরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন জ্বালাও-পোড়াও অব্যাহত ঠিক তখনই রাজধানী ঢাকাসহ ১৪ জেলায় হরতালের ডাক অর্থনীতিতে বিপদ ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে।
রাজনীতির এই অস্থিরতাকে ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’র হিসেবে দেখছেন দেশের শিল্প ও বাণিজ্যখাতের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, এতে অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হবে। তাদের মতে, আবারও হরতাল-অবরোধের আগুনে পুড়ছে অর্থনীতি।
ছয় দিনের টানা অবরোধে ইতিমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশির ভাগ খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে কৃষিজাত খাদ্যপণ্য সরবরাহ করতে পারছে না কৃষক এবং প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ঢাকার বাজারে।
এদেকি অবরোধকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ায় রপ্তানিমুখী শিল্পপণ্যের পরিবহণ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। উৎপাদনও কমেছে শিল্প কলকারখানাগুলোতে।
গত ছয় দিনে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে পরিবহণ খাতে। একদিকে অবরোধকারীরা শত শত বাস-ট্রাক ভাঙচুর করায় ও জ্বালিয়ে দেওয়ায় যেমন আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে তেমনি আন্তঃজেলা পরিবহণ সংগঠনগুলো যাত্রী পরিবহণ করতে না পারায় লোকসান গুনছে বিপুল অঙ্কের অর্থ ।
বিকেলে রংপুরের মিঠাপুকুরে অবরোধকারীরা অবলীলায় ভেঙেছে প্রায় দুই শতাধিক গাড়ি। এতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, বগুড়া, ঢাকায় অর্ধশতাধিক গাড়ি পুড়েছে অবরোধের আগুনে। বাস-ট্রাক পোড়ানো এখনো অব্যাহত। এসব ঘটনায় হতাহত হয়েছে বহু মানুষ।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি ২৪ ঘণ্টার হরতালে কমপক্ষে ৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। শ্রম ঘণ্টা, শ্রম, উৎপাদন এবং বাণিজ্যেও বিষয়গুলো গুরুত্ব পায় এই ক্ষয়ক্ষতির এই হিসাবে।
শীর্ষ বণিক সমিতি এফবিসিসিআইর ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতি ১২ ঘণ্টা হরতাল-অবরোধে কমপক্ষে দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। অর্থনীতির উন্নয়ন সূচকগুলোর গতি থমকে যায়। উন্নয়ন কর্মকা- বাধাগ্রস্ত হয়।
সব মিলিয়ে অবরোধ-হরতালে সাধারণ মানুষের নিত্য দিনের বাজার অর্থনীতি বেশ গরম হয়ে উঠেছে। এর প্রভাব পড়ছে ঘরে-বাইরে।
রাজ / প্রবাস নিউজ