আফরোজা সোমার দুটি কবিতা

বাথটাব

বাথটাবে গরম জল, বাথটাবে ফেনা ও সুগন্ধ
বাথটাবে সে, নিজেকে দেখে আর
করে আড়াল নিজেরই থেকে।

বাথটাবে সংগীত, বাথটাবে চোখ বুঁজে
শোনে কেউ বাখ্, অথবা বাথটাবে
চোখ বুঁজে কাঁদে কেউ নিবিড়ে একা;
অথবা চোখ বুঁজে নিজেরই কাছে
করে সে কান্না আড়াল।

বাথটাবে একটা মানুষ
নিকটের জানালা দিয়ে
কাউকে না জানিয়ে কিছু
দূরে কোথাও মিলিয়ে যেতে চায়।

পরিচয়

সবুজ এই বদ্বীপে ছড়িয়ে আছে যে অগণন ধানের ক্ষেত,
পাকা ধানের সোনালি ছড়ার দিকে চেয়ে কৃষকের মন ভরেছে
যে পরম তৃপ্তিতে, গমের শীষে শীষে বাতাস লেগে মাঠে বেজেছে
যে সংগীত, তার থেকে এসেছে এই কবিতা আজ।

হাট থেকে কেরোসিন তেল ও লবণ নিয়ে প্রাক-সন্ধ্যায়
বাড়ি ফিরছে যে গাঁয়ের চাষী, তার পায়ে লেগে থাকা ধুলোই
আজ এসেছে এই কবিতা হয়ে; শৈশবে রোজ সন্ধ্যায় উলুধ্বনি
আসত দক্ষিণের যে পাড়া থেকে, ক্রমে ক্রমে নাই হয়ে যাওয়া
সেই ধ্বনির বেদনাও মুখ বুঁজে নিয়েছে ঠাঁই এই কবিতায়;
বলব না এই ধুলো এই শোক তুমি বুকে তুলে নাও।

তবে, এদের কথাই আমি বলব নিরন্তর,
আমি মিশে আছি ওই কৃষাণের পায়ের ধুলোয়,
আমি আছি নাই হয়ে যাওয়া উলোধ্বনির সন্ধ্যার বেদনায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.