মুঠোফোন ছাড়া যাঁদের এক দিনও চলে না!

মুঠোফোন ছাড়া কি একটা দিনও থাকা সম্ভব? অনেকেই এখন মুঠোফোন ছাড়া একটা দিন পার করতেও ভয় পান। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের একটি দাতব্য সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশটিতে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ছয়জনই ইন্টারনেট ছাড়া এক দিনও পার করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। শতকরা ৬০ ভাগ মুঠোফোন ছাড়া থাকতে পারবেন না বলেও জানান।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলো এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে পার্থক্য ধরতেই দাতব্য সংস্থাটি এই জরিপ করেছে। পশ্চিমা দেশগুলোর নাগরিকেরা এখন ইন্টারনেট ও মুঠোফোন, কফি ছাড়া যেখানে দিন পার করার কথা ভাবতে পারেন না, সেখানে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের মানুষ বিদ্যুৎ ও সেচ পদ্ধতিকে বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন।
যুক্তরাজ্যের ট্রেড ফেয়ার সংস্থা ট্রেইডক্রাফটের জরিপে বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া এক-তৃতীয়াংশ ব্যক্তি জানিয়েছেন প্রতিদিন সকালে তাঁদের কফি না হলে চলবে না। জরিপে অংশ নেওয়া ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের দুই-তৃতীয়াংশই তাঁদের দরকারি পণ্যের তালিকায় শীর্ষে রেখেছেন স্মার্টফোনকে। লন্ডনবাসীদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরুষ অবশ্য তাঁদের গাড়ি ছাড়া চলতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে, বিশ্বের ৭০ শতাংশ খাবার উত্পাদনকারী কৃষক যাঁরা সামান্য জমি চাষ করে জীবন চালান, তাঁরাই পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। তাঁদের অনেকেরই নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সামান্য চিকিত্সা-সুবিধাটুকুও নেই। তাঁদের সন্তানেরা ঠিকমতো শিক্ষার সুবিধাও পায় না।
মেইল অনলাইনের এক খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ওই দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ, ভারতের কিছু অঞ্চল ও পূর্ব আফ্রিকার কৃষকদের কৃষি ও ব্যবসার দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকদের অল্প জমিতে বেশি শস্য উত্পাদন করে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা নিতে সাহায্য করছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছিলেন ট্রেইডক্রাফটের বিপণন ব্যবস্থাপক ল্যারি বুশ। তিনি বাংলাদেশের কৃষকদের তাঁদের সবচেয়ে দরকারি জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন।
ট্রেইডক্রাফটের ওই কর্মকর্তা জানান, ‘জরিপে কৃষকেরা তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিস হিসেবে বিদ্যুৎ​, জমিতে সেচসুবিধা ও তিনবেলা খাবারের নিশ্চয়তার কথা বলেছেন। এ থেকেই পশ্চিমা দেশ ও উন্নয়নশীল দেশের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের পার্থক্য বোঝা যায়।’
বাংলাদেশের ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে, যাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের সক্ষমতা নেই বলেই উল্লেখ করেছে মেইল অনলাইন।
বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের মতো প্রান্তিক চাষিদের সাহায্য করার লক্ষ্যে ট্রেইডক্রাফট তাদের ওয়েবসাইটে (http://www.traidcraft.co.uk/donate-now) অর্থ সংগ্রহ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *