তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ১০৩৭ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের উদ্বেগ

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৩৭জন শিক্ষক। আজ শুক্রবার (৯ জানুয়ারি ২০১৫) বিকেলে যৌথ এক বিবৃতিতে শিক্ষকরা রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দায়ের করা এ মামলাকে হাস্যকর উল্লেখ করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে শিক্ষকগণ বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতার গণমাধ্যমে প্রচারিত আন্দোলনের আহ্বান নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হবে, এটা দু:খজনক। কোনো স্বাভাবিক ও গণতান্ত্রিক সরকার এমন কান্ড ঘটাতে পারে না। এটা একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক মত প্রকাশ, বাকস্বাধীনতা এবং আন্দোলনের অধিকারকে কেড়ে নেয়ার নগ্ন ষড়যন্ত্র অভিহিত করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।জাতিসংঘসহ বিশ্বের অন্য সব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাক্ষর করা হিউম্যান রাইটস চুক্তিগুলোর প্রতি সম্মান দেখিয়ে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক নেতাদের বাকস্বাধীনতার গুরুত্ব অনুধাবন করে, নাগরিকদের রাজনৈতিক ও বাকস্বাধীনতা বিবেচনায় অবিলম্বে এই ভিত্তিহীন, হাস্যকর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১জনসহ রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, সিলেট শাহজালাল, খুলনা, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বিএসএমএমইউ, বিএসএমকৃবি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১ হাজার ৩৭জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন।বাংলাদেশের নাগরিক এবং চিন্তাশীল ব্যক্তি হিসেবে আমরা একজন রাজনৈতিক নেতার মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার এ উদ্যোগে অত্যন্ত মর্মাহত এবং উদ্বিগ্ন। একজন নাগরিক এবং রাজনৈতিক নেতার ফ্রিডম অব স্পীচ-এ রেসট্রিকশন আরোপের উদ্দেশ্যমূলক এবং বেআইনী পদক্ষেপের বিষয়ে বাংলাদেশের জনগণ, সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের পর্যবেক্ষণ এবং উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরছি।

শিক্ষকগণ বলেন, গত ৮ জানুয়ারি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সম্পুর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে আইনের দৃষ্টিতে এটা হাস্যকর। একজন রাজনৈতিক নেতা তাঁর দলের কর্মী-সমর্থক এবং দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়েছেন, তা গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এতে কোনো রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হওয়ার সুযোগই নাই। এমন হাস্যকর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের মাধ্যমে অবৈধ সরকার বাংলাদেশ রাষ্ট্রকেই হাস্যকর বানাতে চাইছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, দখলদার সরকার ও আওয়ামী লীগ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার হাস্যকর প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. জেড. এন. তাহমিদা বেগম, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ, অধ্যাপক ড. মোঃ মাইমুল আহসান খান, অধ্যাপক প্রফেসর ড. আবদুল আজিজ ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ উল ইসলাম, ড. মোঃ মোর্শেদ হাসান খান, ড. মো: জসিম উদ্দিন, ড. গোলাম রব্বানী, ইস্রাফিল প্রাং রতন প্রমুখ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী, ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, ড. শফিকুল ইসলাম, ড. আবদুল মান্নান, মোহাম্মদ আলম চৌধুরী, ড. মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, ড. মোঃ আমান উল্লাহ প্রমুখ ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, প্রফেসর মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ কামরুল আহসান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আমির হোসেন ভুঁইয়া প্রমুখ ।খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম, শরীফ মোহাম্মদ খান, অধ্যাপক ড. হারুন-অর রশীদ প্রমুখ ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এম. রফিকুল ইসলাম, প্রফেসর মুহাম্মদ আজাহার আলী, প্রফেসর মোস্তফা কামাল আকন্দ, প্রফেসর এম নজরুল ইসলাম, প্রফেসর মামনুনুল কেরামত প্রমুখ ।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদা, মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ তানজিল হোসেন প্রমুখ । ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার অধ্যাপক ড. মোঃ তোজাম্মেল হোসেন, আ ফ ম আরিফুর রহমান (নোবিপ্রবি), প্রকৌশলী সাব্বির মোস্তফা খান (বুয়েট), অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (বিএসএমএমইউ), অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (শাবিপ্রবি), প্রফেসর ড. আবদুল করিম (বিএসএমকৃবি), ড. মোঃ গোলাম আরিফ কেনেডি (বাকৃবি) প্রমুখ ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১ জন শিক্ষক হলেন- অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান মজুমদার, অধ্যাপক. ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোঃ আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. লায়লা নূর ইসলাম, ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *