মধ্যবর্তী নির্বাচন ছাড়া চলমান সংকট উত্তরণের কোনো পথ নেই বলে মনে করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান। তিনি বলেন, ‘বড় রাজনৈতিক দল দুইটির সমঝোতার জন্য বসতে হবে। অন্যথায় দেশ অজানা গন্তব্যে চলে যাবে।’ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে শুক্রবার এতথ্য জানান সাবেক এই মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘বিরোধী রাজনৈতিক দলের ভূমিকা সম্পর্কে আমি কোনো মন্তব্য করব না। কারণ, তারা তো এখন আর ক্ষমতায় নেই। কিন্তু সরকার যা করছে, সেটা সমর্থন করার মতো নয়। এ জন্য একসময় তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।
তারা বিরোধী দল বিএনপিকে দমন-পীড়নের জন্য কখনো হার্ডলাইনে, কখনো সফটলাইনে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। গত কয়েক বছরে সফটলাইন আর হার্ডলাইনের সূচক ওঠানামা করেছে। এখন যা করছে, তা সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের এখনকার আচরণ গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার-বহির্ভূত। তাদের পক্ষ থেকে যা বলা হচ্ছে, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। তারা সত্য বলছে না। যা করে যাচ্ছে, বলে বেড়াচ্ছে তার উল্টোটা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমনটা চলতে পারে না। এভাবে চললে রাজনীতির প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হবে। সবার আগে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে আওয়ামী লীগ। তেমনটা যদি ঘটে, ঐতিহাসিক কারণেই সেটা দেশের রাজনীতির জন্য ভালো হবে না।’ আকবর আলি খান বলেন, ‘আমরা অতীতে সংঘাতের রাজনীতিতে ছিলাম। এখনো সেই সংঘাতের মধ্যেই আছি।
মাঝেমধ্যে কিছুদিনের জন্য সংঘাত কমে যায়। আবার বেড়ে যায়। এই কমবেশি সংঘাতের মধ্য দিয়ে তো চার দশক পার হলো। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের সম্ভাবনা তৈরি হবে, যদি প্রধান দুই রাজনৈতিক দল সমঝোতার জন্য আলোচনায় বসে।’ তিনি বলেন, ‘আলোচনার বিষয়ে আওয়ামী লীগকে উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ, দেশ এখন তারা পরিচালনা করছে। কিন্তু সমঝোতা বা আলোচনার কোনো লক্ষণ তো দেখতে পাচ্ছি না। সরকারি দল থেকে সেই রকম কোনো উদ্যোগ নেই। বিএনপিও একই পথে। অর্থাৎ সংঘাতের রাজনীতি চলবে। কারণ, দুটি দলই এই তত্ত্বে অনমনীয়। এভাবে চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি ধসে যাবে। জানমালের ক্ষতি হবে। দুর্ভাগ্য হলো, রাজনৈতিক দলের হানাহানির ফল ভোগ করতে হবে দেশের জনগণকে, কোনো রাজনৈতিক দলকে নয়।
আতিক/ প্রবাস