তাবলিগ ইবাদত ও সৎকাজে উদ্বুদ্ধ করে


মাওলানা মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন

কহর দরিয়া তুরাগ পাড়ে তাবলিগ জামাত আয়োজিত ৫০তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে। রবিবার তা শেষ হবে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে। আখেরি মোনাজাতে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে দোয়া করা হবে। বিশ্ব ইজতেমায় সমবেত মুসল্লিরা তাদের দাওয়াতি কাফেলাকে বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে মহান আল্লাহর সহায়তা চাইবেন। তাবলিগের দাওয়াত নিয়ে যারা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘোরেন তারা হলেন মহান স্রষ্টা কর্তৃক উল্লিখিত সেইসব বান্দা যাদের কথা সূরা আল ইমরানের ১০৪ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একদল হোক যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎ কাজে নিষেধ করবে, এরাই সফলকাম।’ বিশ্ব ইজতেমা হলো ওই দাওয়াতদাতাদের ইজতেমা।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অনুসারীদের দাওয়াতি মেহনতে নিয়োজিত হওয়ার দিকনির্দেশনা দান করেছেন। বুখারি ও মুসলিম শরিফে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ‘তোমরা মানুষের সঙ্গে নম্র ব্যবহার করো, রূঢ় আচরণ করো না, সুসংবাদ দাও, ভীত সন্ত্রস্ত করো না।’ মূলত কীভাবে দীনের দাওয়াত হবে তার গাইড লাইন বর্ণিত হয়েছে ওই হাদিসে। আল্লাহর প্রকৃত প্রেমিকরা জান-মাল উৎসর্গ করে তাবলিগের মেহনতে নিজেদের নিয়োগ করেন। আল্লাহ ও রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পথে সবাইকে আসার জন্য আহ্বান করেন তারা। তারা ফরজ হুকুমগুলো যথাযথভাবে পালনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন, রসুলের সুন্নত ভুলে গিয়ে যারা বিপথে চলছে, কিংবা সিদ্ধান্তহীনতায় হাবুডুবু খাচ্ছে, তাদের সঠিক পথের দিশা দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। জগৎবিখ্যাত দারুল উলুম দেওবন্দের বুুজুর্গ হজরত মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) মানুষকে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের পথে আনার জন্য যে মেহনত শুরু করেন তা আজ দীন প্রতিষ্ঠার মহাআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। তাবলিগ জামাত পথ ভোলা মানুষকে আল্লাহ ও রসুলের পথের সন্ধান দেওয়া ও বিপথগামীদের সঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছে। মানুষকে গোনাহ থেকে দূরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করছে তাবলিগ জামাত। সৎ কাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেও তারা মুমিনদের উদ্বুদ্ধ করছেন। বিশ্বে শান্তি ও সহমর্মিতার পরিবেশ সৃষ্টিতেও অবদান রাখছে হজরত মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর প্রতিষ্ঠিত এই জামাত।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *