স্থানীয় সময়, বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে প্যারিসের বাস্তিল মনুমেন্টের অদূরে অবস্থিত শার্লে এবদো নামের ওই পত্রিকা অফিসে হামলা চালায় মুখোশ ঢাকা তিন বন্দুকধারী। তাদের হাতে ছিলো একে-৪৭ সাব মেশিন গান ও রকেট লাঞ্চারের মত ভারী অস্ত্র। হামলার পর গাড়িতে করে পালিয়ে যাওয়ার আগে তাদের তাণ্ডবে প্রাণ হারান কমপক্ষে ১২ জন। নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে দুইজন পুলিশ সদস্য। এছাড়া পত্রিকার সম্পাদক সহ সেখানে কর্মরত ফ্রান্সের বেশ কয়েকজন প্রথম সারির কার্টুনিস্টও এ ঘটনায় প্রাণ হারান।
শার্লে এবদো পত্রিকাটি ফ্রান্সের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যঙ্গ পত্রিকা হিসেবে পরিচিত। মাঝে মাঝেই পত্রিকাটি সমসাময়িক ঘটনার ব্যঙ্গচিত্র ছাপিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে। সম্প্রতি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট প্রধান আবু বকর আল বাগদাদিরও ব্যঙ্গ কার্টুন চিত্র প্রকাশ করে পত্রিকাটি।
প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে এ রকম সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্তম্ভিত পুরো ফ্রান্স। হামলার পরপরই রাজধানী প্যারিসে জারি করা হয়েছে সন্ত্রাস বিরোধী সর্বোচ্চ সতর্কতা। ঘটনাস্থলে ইতোমধ্যেই পৌঁছেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ সহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা। হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ফরাসি সংস্কৃতিমন্ত্রী ফ্লের প্যালেরিন সহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী। পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য রাতে এলিসি প্রাসাদে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ।
হামলাকারীদের ধরতে এবং এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্যারিসের মেট্রোপলিটন অঞ্চলে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারির নির্দেশ দিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। হামলাকারীদের ধরতে ফ্রান্সজুড়ে স্মরণকালের সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে ফরাসি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফ্রান্সের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক, ওবামা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল সহ বিশ্বনেতারা।
ক্যামেরন বলেন, প্যারিসের এই হত্যাকাণ্ড মর্মান্তিক। আমরা ফ্রান্সের মানুষের সঙ্গে আছি। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ।