বান্দরবান: ‘৫ জানুয়ারি’ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি কেন্দ্র করে বান্দরবানে পুলিশ পাহারায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের হামলা প্রতিরোধ করতে গেলে পুলিশ-সাংবাদিকসহ উভয় দলের অন্তত ৩০ জন আহত হন। তবে এ ঘটনায় পুলিশ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কসহ বিএনপির ছয় নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে শহরের বাজার এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ‘দৈনিক সচিত্র মৈত্রী’র কার্যালয় ও জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ ২৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করে। ঘটনার পর পর শহরে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে ট্রাফিক মোড় এলাকার প্রেসক্লাব সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ। সকাল ১০টা দিকে বাজার এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় তারা দলীয় কার্যালয়ে সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। পরে পুলিশ পাহারায় মুক্তমঞ্চ থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাঠি হাতে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে দিকে যান। এ সময় উভয়পক্ষ নানা শ্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপির সমাবেশে হামলা চালায়।
পুলিশ পাহারায় বিএনপির ওপর আ.লীগের হামলাএ সময় প্রতিরোধ করতে গেলে জেলা বিএনপির সভাপতি সাচিং প্রু জেরী, প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক মো. ওসমান গণি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র মো. জাবেদ রেজা, জেলা বিএনপির যুগ্ন-সম্পাদক মুজিবুর রশীদ, জেলা আওয়াশী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুজিবর রহমান, কৃষকলীগের পৌর সেক্রেটারি আবুল বাশার, যুবলীগ কর্মী বিপ্লব, পুলিশ সদস্য খায়রুল, মোহাম্মদ মুন্না ও ইদ্রিসসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।
দলীয় নেতাকর্মীর আহত হওয়ার খবর পেয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া শহরে ‘দৈনিক সচিত্র মৈত্রী’র কার্যালয়সহ বিএনপির সমর্থিত ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালায় তারা।
তবে এসব ঘটনায় দুপুর ২টার দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র মো. জাবেদ রেজাসহ সাত নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। অবশ্য আটকের কিছুক্ষণ পর পৌর মেয়রকে ছেড়ে দেয়া হয়।
পুলিশ পাহারায় বিএনপির ওপর আ.লীগের হামলাএদিকে, ঘটনার পর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমর্থিত নেতাকর্মীরা লাঠি, রড, ইট পাটকেলসহ নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মী, সাংবাদিকদের খোঁজ করতে থাকে। দুপুর ১টার দিকে সংবাদ সংগ্রহ করার সময় সাংবাদিক এইচএম সম্রাটকে ট্রাফিক মোডে একা পেয়ে মারধর করে তারা। এ সময় স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান বাংলামেইলকে জানান, বিএনপি সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণ অবস্থানে মিছিল ও সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু পুলিশ পাহারায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে।
হামলার দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান বাংলামেইলকে জানান, তাদের দলের নেতাকর্মীরাও শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস পালন করছিল। কিন্তু প্রথমে বিএনপির মিছিল থেকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন জানান বাংলামেইলকে জানান, অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।