বাংলাদেশি যুবকের কারণে ঘুম হারাম ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের

ের টিকিট
প্রাপ্তির বিকল্প পন্থা খুঁজে বের করার
দায়ে আক্তারার জামান নামে ২২ বছরের এক যুবকের
বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ইউনাইটেড
এয়ারলাইন্স ও তাদের ট্রাভেল পার্টনার অরবিটজ।
তিনি স্কিপল্যাগড.কম ওয়েব সাইটটির প্রতিষ্ঠাতা।
একটি সাইড প্রোজেক্ট হিসেবে এই সাইটটি চালান
তিনি। ‘হিডেন সিটি’ নামের এই সেবায় সস্তায়
টিকেট কিনে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন
ভোক্তারা। এতে ক্ষেপে আগুন ইউনাইটেড
এয়ারলাইন্স ও অরবিটজ।
বাংলাদেশে জন্ম নেয়া আক্তারার জামান নিউ
ইয়র্কের ব্রুকলিনে বড় হয়েছেন। মাত্র ২০ বছর
বয়সে রেন্সেলায়ের পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি পাশ
করেন তিনি। ম্যানহাটনে বসবাসকারী কম্পিউটার
পারদর্শী এই যুবক একটি টেকনোলজি স্টার্টআপে কাজ
করছেন যেটির নাম তিনি প্রকাশ করেননি।
গত মাসে স্কিপল্যাগড.কম সাইটটিকে বন্ধ করে দেয়ার
জন্য মামলা দায়ের করেছে এই দুই সংস্থা। জামানের
কাছে তারা ৭৫০০০ ডলার রাজস্ব ক্ষতিপূরণ
হিসেবে দাবি করেছে।
সিএনএন মানি’র প্যাট্রিক বলেন, মামলায়
তারা উল্লেখ করেন সাইটটি “অন্যায্য
প্রতিযোগিতা” করছে এবং এটি “
কঠোরভাবে নিষিদ্ধ” ভ্রমণকে উৎসাহিত করছে।
কিন্তু মাথা না নুইয়ে লড়ে যাচ্ছেন জামান।
“স্কিপল্যাগড যা করছে তা আইনগতভাবে সম্পূর্ণ বৈধ।
এখন তা কেবল আইনজীবীদের কাছে প্রমাণ
করতে হবে”, ‘গো ফান্ড মি’ সাইটের এক ব্লগ
পোস্টে জামান একথা বলেন। জামান
ক্রাউডফান্ডিং-এর মাধ্যমে মামলার টাকার অন্তত
২০,০০০ ডলার পরিশোধ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
প্রতি মিনিটেই উল্লেখযোগ্য হারে অর্থ
জমা হচ্ছে জামানের পক্ষে। যারা অর্থ দিচ্ছেন
তাদের প্রতি তিনি বলেন, “আমি জানি না এই
মামলায় শেষপর্যন্ত কত খরচ হবে, হয়তো প্রচুর। কিন্তু
আমি কথা দিচ্ছি যে প্রতিটি পয়সার হিসাব
এখানে দিতে থাকবো। যদি কোনো রিফান্ড
থেকে যায়, তাহলে তা চ্যারিটিতে ব্যয় করবো।
আমি এখনও জানি না কোনটিতে দেবো, আপনাদের
কোনো সাজেশন থাকলে আমাকে মেসেজ দেবেন”।
সাধারণ মানুষকে সহজ ও স্বল্পমূল্যে বিমানের টিকিট
পাইয়ে দিতে ওয়েব সাইটটি বানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কোম্পানি ও তাদের
ট্রাভেল পার্টনার অরবিটজ সাইটটি বন্ধ করার জন্য
মরিয়া।
পন্থাটি এরকম, একজন যাত্রী এমনভাবে বিমানের
টিকিট কিনবেন যাতে যাত্রা বিরতিই তাঁর
নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থল হয়। ধরা যাক, কেউ নিউ ইয়র্ক
থেকে সান ফ্রানসিস্কো যাবেন। আসলে তিনি নিউ
ইয়র্ক থেকে লেক তাহোর টিকিটটি কিনছেন আর
যাত্রা বিরতিতে সান
ফ্রানসিস্কোতে নেমে যাচ্ছেন।
এতে স্বল্পমূল্যে এবং কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই
পৌছে যাচ্ছেন তাঁর গন্তব্যে।
তবে, পন্থাটি কেবল ওয়ান-ওয়ে ফ্লাইটের
ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর
যাত্রা বিরতিতে কোনো চেকিং ব্যাগ বহন
করা যাবে না। সবসময় স্বল্পমূল্যে টিকিট পাওয়াও সম্ভব
নয়।
যাত্রীদের মতে, এভাবে ভ্রমণ করা সম্পূর্ণ বৈধ।
ফ্লাইটের জন্য টাকা খরচ করার পর তারা পুরো সময়
সিটে বসে থাকলেন না মাঝে নেমে গেলেন
তাতে এয়ারলাইনের কী এসে যায়?
এয়ারলাইনগুলো চায় যাত্রী যেন তাদের জটিল
প্যাঁচানো স্কিমে খরচ করে। কেউ যাতে স্কিমের
ফাঁক ধরে ফেলে সাশ্রয় করতে না পারে।
তারা যুক্তি দেখায় হিডেন সিটি’র
মাধ্যমে যাত্রীরা অন্যায়ভাবে সুযোগ নেয় আর
এতে যাত্রীদের ট্র্যাক করা মুশকিল হয়ে যায়।
এই
পন্থা সম্পর্কে যাত্রীরা জেনে গেলে এয়ারলাইনগুলো প্রচণ্ড
ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। ব্লুমবার্গের সূত্র
অনুযায়ী, কোনো এয়ারলাইন
যদি বুঝে ফেলে যে একজন
যাত্রী বিরতিতে নেমে পড়বে তাহলে তারা সেই
টিকেট বাতিলও করে দিতে পারে,
কোনো রিফান্ড ছাড়াই।
এমনকি তারা কোনো যাত্রীর ‘ফ্রিকোয়েন্ট
ফ্লাইয়ার মাইলেজ’ও বাতিল করে দিতে পারে।
ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক
বিবৃতিতে জানায়, ‘এই প্র্যাক্টিসের
মাধ্যমে আমাদের ন্যায্য নিয়মকে লঙ্ঘন করা হয়
এবং বেশিরভাগ যাত্রী, যারা বৈধ টিকেট কেনেন
তাদেরকে রক্ষার স্বার্থে এই পন্থা বন্ধ করার জন্য
পদক্ষেপ নিচ্ছি’।
অরবিটজ-এর মুখপাত্র বলেন, ‘স্কিপল্যাগড
যে টেকনোলজি ডেভেলপ করেছে তাতে অরবিটজ-
এর বুকিং ইঞ্জিনের সাথে একটি ডাইরেক্ট লিঙ্ক
দেয়া আছে। কাজেই কোনো কাস্টমার হিডেন
সিটি যাত্রা করার জন্য ‘বুক নাও’ বাটনে ক্লিক
করলে সরাসরি আমাদের কাছে পৌঁছে যেত
এবং তার উদ্দেশ্য না বুঝেই আমরা তার
সাথে লেনদেন করে ফেলতাম”। অরবিটজ-এর একজন
প্রতিনিধি বলেন,
‘আমরা স্কিপল্যাগডকে বলেছিলাম লিঙ্কটা বাতিল
করে দিতে কিন্তু তারা প্রত্যাখ্যান করে। এরপর
থেকে আমরা লিঙ্কটাকে ব্লক করে দেই”।
জামান সিবিএস নিউজকে জানান
যে তিনি জানতেন মামলাটি অনিবার্য
ছিলো তবে তার সাইটে অনৈতিক
কোনো পন্থা অবলম্বন করা হয়নি। তিনি আরও বলেন,
“ওয়েব সাইটটির মাধ্যমে একটি পয়সাও আয় করিনি।
নিজের পকেট থেকে শুধুমাত্র সাধারণ মানুষদের
সাহায্য করার চেষ্টা করেছি”।
সিএনএন মানি-কে জামান বলেন, ‘হিডেন
টিকেটিং মাত্র কিছুদিন ধরে এসেছে,
এটা ভোক্তাদের হাতের নাগালে আছে’।
“সাইট যারা ভিজিট করে এই সেবা নেন তাঁদের ৮০%
পর্যন্ত সাশ্রয় হয়। আমার কাজ হলো তথ্য সরবরাহ করা।
লাভ করা নয়। এই তথ্যগুলো উন্মুক্ত, কিন্তু সবাই এত
ঘেঁটে এতসব তথ্য বের করতে পারেন না তাই
আমি সেগুলোকে জড়ো করে এক জায়গায়
এনে ভোক্তাদের সাহায্য করি”, ফক্স নিউজকে বলেন
জামান।
অন্যান্য ট্রাভেল এক্সপার্টরা বলছেন, জামানের
সাইট বন্ধ হয়ে গেলেও এয়ারলাইনসগুলো এমন
কোনো উপকৃত হবে না। কারণ বর্তমান
পৃথিবীতে যেকোনো তথ্যই খুব সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে। এই
সাইট বন্ধ হয়ে গেলে অন্যরা এই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *