ঢাকাঃ কথায় বলে এক দেহ, দুই প্রাণ। রোনি আর ডোনি গ্যালিয়নেরও হয়েছে তাই। তারা দুই ভাই। গত ৬৩ বছর ধরে একে অন্যকে এক মুহূর্তের জন্যও চোখের আড়াল করেন না। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা, কেবল ঘুমানোর সময়টা ছাড়া একে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এমনকি কখনও যদি একে অন্যের প্রতি ক্ষেপেও যান, মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায় না তাদের। গত অক্টোবরে দুই ভাই একই স্থানে, একই সঙ্গে একে অন্যের সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে নিজেদের ৬৩তম জন্মদিন উদযাপন করলেন।
তারা দু’জন যমজ ভাই। ভিন্ন ভিন্ন শরীরের যমজ নয়, একে অন্যের সঙ্গে একেবারে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাদের দু’জনকে একত্রে বহন করার জন্য রয়েছে
চারখানা পা। এটা-ওটা ধরাছোঁয়ার জন্য চারখানা হাত। তাদের পাকস্থলী ভিন্ন, হৃদয় ভিন্ন। তবে একে অন্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন একটি মাত্র কোমর নিয়ে। আর তাদের কুঁচকি, মলদ্বার, পরিপাকতন্ত্র, এমন কি একটি মাত্র জননেন্দ্রিয়ও। তবে এসবের ওপর ডোনির নিয়ন্ত্রণ রোনির চেয়ে বেশি।
এমন জটিল ও অদ্ভুত শারীরিক গঠন নিয়ে যদি দু’জন মানবশিশু জন্ম নেয়, তাদের ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তবু কেউ কেউ বেঁচে যায়। কিছু দিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকে, এরপর মরে যায়। স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় তাদের আয়ু নিতান্তই কম হয়।
কিন্তু রোনি-ডোনির বেলায় প্রকৃতি অনেক উদার ভূমিকা রেখেছে। দুই ভাই একই শরীর নিয়েও ২০১৪ সালের অক্টোবরে ৬৩ বছরে পা রেখেছেন। আর এতেই দুই ভাই নতুন বিশ্বরেকর্ড করেছেন। অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত অবস্থায় সবচেয়ে বেশি সময় বেঁচে থাকার আগের রেকর্ড অতিক্রম করেছেন। ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর গ্যালিয়ন ভ্রাতৃদ্বয় ৬৩ পেরিয়েছেন। ১৮৮৭ সালে ইতালিতে জন্মগ্রহণকারী দুই ভাই গিয়াকোমো ও গিয়াভানি্ন বাতিস্তা টচ্চি ভায়েরা ৬৩ পুরো হওয়ার আগে মারা গিয়েছিলেন।
তো এ রকম অবস্থায় কি খুব মনমরা অবস্থায় থাকেন গ্যালিয়ন ভায়েরা। মোটেই না। তারা স্বাভাবিক মানুষের মতোই নিজেদের ‘স্বাভাবিক’ মানুষ মনে করেন এবং এভাবে বেঁচে থাকাকে উপভোগ করেন। রোনি ও ডোনি গ্যালিয়নের আত্মীয় জিম গ্যালিয়ন বলেছেন, ‘তারা দুই ভাই একে অন্যকে ভালোবাসে এবং হাসি আনন্দের মধ্য দিয়ে চমৎকার সময় কাটায়।’
দুই ভাই জিম গ্যালিয়নের সঙ্গে জন্মদিনের উপহার হিসেবে ফ্লোরিডায় বেড়িয়ে এসেছেন। বেড়িয়েছেন ডিজনি ওয়ার্ল্ডসহ অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গায়।
জিম বলেন, ‘আমরা ওদের নিয়ে মোটেই বিব্রত নই। বরং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, ওরা সুন্দরভাবে বেঁচে আছে।’ দ্য মেইল অনলাইন।