জম্মু-কাশ্মীরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গোলাগুলিতে ৫ সীমান্ত রক্ষী নিহত

নতুন বছরে ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান সীমান্ত। জম্মু-কাশ্মীরে বুধবার থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে ভারতের এক বিএসএফ জওয়ান এবং পাকিস্তানের ৪ সীমান্ত রক্ষী নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বুধবারই ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্কর জানিয়েছিলেন, সীমান্তের ওপার থেকে আঘাত এলে উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে।
এদিকে, রাতে কিছুক্ষণ হামলা বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ফের হামলা শুরু করে পাক সেনা। পাক গোলায় বিধ্বস্ত সীমান্ত সংলগ্ন একাধিক গ্রাম।
জম্মু থেকে ৪১ কিমি. দূরে সীমান্তবর্তী সাম্বা ও হরিনগর সেক্টরের বিএসএফ ঘাঁটিগুলো মূলত টার্গেট করেছে পাকিস্তান। ভোর থেকেই ১৫টি বিএসএফ ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্রমাগত গুলি চালায় পাক সেনা। যদিও পাক সেনার দাবি, ভারতই প্রথম সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লংঘন শুরু করে। ভারতের হামলায় বেশ কয়েকজন পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। সেই হামলার জবাবেই ভারতীয় সীমান্তে আক্রমণ শুরু করেছে পাকিস্তান।
আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর বিনা উস্কানিতে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সদের হামলায় বিএসএফ জওয়ান রাম গোরিয়া নিহত এবং একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর আহত হয়েছেন। হামলার কথা শোনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বিএসএফের ডিজিকে এর যথাযথ জবাব দেয়ার নির্দেশ দেন। দিল্লি থেকে প্রকাশিত এক সরকারি বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিএসএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল রাকেশ শর্মা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, আমরা চার পাকিস্তানি রেঞ্জার্সকে হত্যা করে ভালোভাবেই এর প্রতিশোধ নিয়েছি। পরে হতাহতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা সাদা পতাকা তুলে আমাদের থামতে বলে যাতে তারা লাশ সরিয়ে নিতে পারে।
তিনি বলেন, তাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে আমরা হামলা বন্ধ করি এবং সীমান্তে এসে লাশ সরিয়ে নেয়ার সুযোগ করে দেই।
অন্যদিকে পাকিস্তানের দাবি সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় তাদের দু’জন রক্ষী নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন নায়েক রিয়াজ সাকার ও ল্যান্স নায়েক সফদর। এ ঘটনায় তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে জওয়ানদের মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সরকার।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হিসেবে পাকিস্তানে ভারতের উপ-রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে নওয়াজ শরিফ সরকার।
উল্লেখ্য, কয়েক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তের সংঘাত সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তীব্র সহিংসতায় রূপ নেয়। গত অক্টোবরে উভয়পক্ষেরই অন্তত ২০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে কাশ্মীর উপত্যকায় সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা ঘটে। রাজ্যের নির্বাচন চলাকালীন সময়ে যোদ্ধারা ১১ জন ভারতীয় সেনা ও পুলিশকে হত্যা করে। এনডিটিভি, ডন, বিবিসি।

আতিক/প্রবাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *