তবে অব্যবস্থাপনার কারণে দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা যায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।
অনুষ্ঠানে গণশিক্ষামন্ত্রীকে সম্বোধন করা হয় ওই মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসাবে। মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রজমান ফিজার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করলেও মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি বলা নিয়েও অতিথিদের মধ্যে ফিসফাস চলে।
এ উৎসবের মধ্য দিয়ে এবার দেশের প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের চার কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ৩৭৪ শিক্ষার্থীর হাতে ৩২ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৩টি চাররঙা নতুন বই তুলে দেওয়া হচ্ছে।জেলা পর্যায়ের স্কুলগুলো থেকেও উৎসবের খবরে এসেছে।
সরকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করে আসছে ২০১০ সাল থেকে। এ বছর বইয়ের তালিকায় যোগ হয়েছে নবম শ্রেণির ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা’ এবং অষ্টম শ্রেণির ‘কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা’ বই।ইবতেদায়ী স্তরের সব বই এবার ছাপানো হয়েছে চার রঙে।
অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে সকাল ৮টা থেকেই শিক্ষার্থীরা মতিঝিল বালক বিদ্যালয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হতে থাকে। তাদের বসার জন্য ধুলোময় মাঠে কার্পেটের ব্যবস্থা রাখা হলেও অভিভাবকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
ছেলেকে নিয়ে উৎসবে এসে বসার জায়গা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিরিন আক্তার।
তিনি বলেন, “অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা কেন থাকবে না? হরতালের মধ্যে বই নিতে আসতে তো ঠিকই বাচ্চাদের চাপ দেওয়া হয়েছে।”
তার মতো আরো কয়েকজন অভিভাবককে উৎসবস্থলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
উৎসবের অনুষ্ঠান মঞ্চ ঘিরেও বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। দুই মন্ত্রী ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে মঞ্চে উঠে পড়ে শতাধিক মানুষ।
মঞ্চের ঠিক সামনে ভিড় থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেকেই মঞ্চে কী হচ্ছে তা দেখতে পাচ্ছিল না। অব্যবস্থাপনা আর হৈ চৈ এর মধ্যেই অতিথিরা বক্তব্য দিয়ে যান।
বক্তব্য দিতে এসে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানকে ফিজারকে মন্ত্রণালয়ের সচিব বলে উল্লেখ করেন।
গণশিক্ষামন্ত্রী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করলেও কয়েকজন অতিথি তাদের বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি সম্বোধন করায় অনুষ্ঠানে অস্বস্তি দেখা যায়।
এই এলোমেলো পরিস্থিতির মধ্যে দুই মন্ত্রীও যেন খেই হারিয়ে ফেলেন। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না করেই তাদেরকে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে দেখা যায়।পরে বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় এবং মন্ত্রীসহ অতিথিরা মঞ্চ থেকে নেমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছবি তোলেন।
অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক হুমায়ুন কবীর বলেন, তার মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হলেও তাকে বাদ দিয়ে মন্ত্রীর হাত থেকে বই দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় স্থানে থাকা শিক্ষার্থীকে।প্রধান শিক্ষক ইচ্ছে করেই এমনটি করেছেন বলে অভিযোগ তার।
তবে আয়োজকদের কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
অন্যদের মধ্যে শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব কাজী আখতার হোসেন, জাতীয় শিক্রাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিয়া, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।